আনোয়ার হোসেন জুয়েল, তাড়াইল প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : রবিবার, ২ মার্চ, ২০২৫ , আজকের সময় : সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫

তাড়াইলে ৫ হাজার টাকায় বিয়ের বাজার! রমজানে ভোক্তাদের স্বস্তি

বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরে উঠেছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার প্রতিটি বাজার । সব প্রকার সবজির দামে সস্তিতে আছে উপজেলার মানুষ। খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম এখন ভোক্তার নাগালে। অল্প টাকায় ব্যাগ ভর্তি বাজার করতে পারছে সাধারণ মানুষ।

১লা মার্চ (শনিবার) সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোক্তাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, শীত মৌসুমে সবজি বাজারে এখনো পাওয়া যাচ্ছে ফলে রমজান মাস উপলক্ষে সবকিছুর দামেই নাগালের ভিতরে রয়েছে। কোনো সিন্ডিকেট না থাকায় সকল পণ্যের দামও কম রয়েছে। ক্রেতাদের স্বাদ্য অনুযায়ী বাজার করতে পারছে। বিশেষকরে দুধ, চিনি, ছোলা বুট ও ডাল, বেগুন, আলু, পেঁয়াজ ও মসলার মতো অনেক নিত্যপণ্যের স্বাভাবিক দামে ক্রয় করতে পারছে স্বল্প আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্যের দর ওঠানামার বিষয়টি নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। কিন্তু গত ১৫ বছরে এত কম দামে সবজি বিক্রি করিনি। দাম কম থাকায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বাচ্ছ্ন্দমত ক্রয় করছেন। তাছাড়া বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য রয়েছে।

তাড়াইল সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম ৪০, বেগুন ৫০, করলা ৬০, ফুলকপি পিস কেনা যাচ্ছে ১৫, বাঁধাকপি ১০ টাকা, কাঁচামরিচের কেজি ৩৫ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, ডায়মন্ড আলু ২৫ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, আদা ১৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৫ টাকা, হলুদ ৩০০ টাকা, কুমড়া ৪০ পিস , লাউ প্রতি পিচ ৪০ টাকা, পুরল ৬০টাকা, শসা ৫০ টাকা, লতা ১০০টাকা, পেঁপে ৩০টাকা, গাজর ৩০টাকা, লেবু কেজি ১৫০ টাকা, ধনিয়া পাতা ৫০টাকা, লতি ১০০ টাকা, খেজুর কেজি ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকা, প্যাকেটজাত আটা ৪৫ টাকা, মুশুরির ডাল ১০৫, দেশি ১৩৫ টাকা, ছোলার বুট ১০০ টাকা, মুগের ডাল ১২৫ টাকা, ডিম ৪০ টাকা হালি, সয়াবিন তেল ১৯৫ টাকা লিটার এবং খোলা তেল ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, মুড়ি ৫ কেজির প্যাকেট ৩৪০ থেকে ৪২০ টাকা।

অন্যদিকে চাল কেজি প্রতি কাটারি ৭২ টাকা, ইন্ডিয়ান ৭৬ টাকা, ৪৯ চাউল ৬০ টাকা, ২৯ চাউল ৬৪ টাকা, বিআর(২৮) ৭০ টাকা, কাটা চাল ৪৮ টাকা, আতব ৫০ টাকা, পোলাও ১০০-১২০ টাকা।

এদিকে মাংসের বাজারে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, কক ২২০ টাকা, লেয়ার কক ৩২০ টাকা, ক্লাসিক (সোনালী) ২৮০ টাকা, কালার বাট ২৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা, খাসি ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাংসের বাজারে আগের তুলনায় তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।

বাজার করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। আমরা পছন্দনুযায়ী বাজার করতে পারছি। নতুন স্বাধীনতা উপভোগ করছি এখন। এভাবে সকল পণ্যের দাম ঠিক থাকলে আমরা যারা নিম্ন আয় ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক তাদের বাজার কিনতে কোনো সমস্যা হবে না।

তারা আরো বলেন, গরু, খাশি ও মুরগির মাংসের দাম একটু বেশি। আগের মতই রয়েছে এসব মাংসের দাম। এগুলোর দাম আরেকটু কমলে সবাই কিনতে পারতো। মধ্যবিত্তের মাংসের খাবার বলতে ব্রয়লার মুরগী তারও দাম এখনো ২’শ টাকার মতো। ফলে রোজার মধ্যে মাংস কিনতে পারছি না। তাছাড়া অন্যান্য সবকিছু আমাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে।

বাজার করতে মাসুদ রানা বলেন, বর্তমান বাজারের সবকিছুর দামই সস্তা। ৫ হাজার টাকার কাঁচা বাজার করে বিয়ের আয়োজন করা যাবে। তাছাড়া মমিন মিয়া, ফখর উদ্দিন, ছালেহা খাতুন সহ আরো অনেকেই বলেন, রমজান মাসে বাজার দর এরকম থাকবেই তা আগে চিন্তাই করতে পারতামনা। এখন বাজার করে সন্তানাদি নিয়ে তৃপ্তির সহিত খেতে পারবো।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিকী বলেন, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছি যে, সরকার নির্ধারিত দামে সকল পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য। তাছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।