
দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। তারই মাঝে সারিবদ্ধ ভাবে শোভা পাচ্ছে সাদা সাদা পেঁয়াজের কদম৷ পেঁয়াজের সাদা কদম শুকিয়ে বের হয় কালো বীজ। যার বাজারদর আকাশচুম্বী, তাইতো কৃষক এর নাম দিয়েছে ‘কালো সোনা’।
গত কয়েক বছরে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের স্বপ্নটাও এবার বড়। সরেজমিনে হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুল। প্রতিটি এলাকাতেই কম বেশি চাষ করা হয়েছে পেঁয়াজের বীজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
উপজেলার গালা ইউনিয়নের দশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন জানান, এই ফসলে ভালো লাভবান হওয়া যায়। আমি গত কয়েক বছর যাবৎ পেঁয়াজ বীজের চাষ করে আসছি। এবছর আমি ১৪ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছি। আশা করছি নিজের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর পরেও কিছু বীজ বিক্রি করতে পারবো।
একই ইউনিয়নের বিজয়নগর গ্রামের কৃষক আখেজুদ্দিন বলেন, গত বছর পেঁয়াজ ও বীজের দাম ভালো থাকায় এ বছর বেশ আগ্রহ নিয়ে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছি। বাড়িতে সংগ্রহ করা পেঁয়াজ থেকেই এবছর তিনি ২০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজ চাষ করেছে। অনেকেই পেঁয়াজ কিনে চাষ করেন। তাদের অনেক বেশি হয় ও লাভ কম হয়। পাশাপাশি অন্যান্য খরচও থাকে।
বাল্লা ইউনিয়নের বৈকা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, এবছর আমি ২৫ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষাবাদ করছি। ক্ষেত পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছি। মৌমাছি কম থাকায় হাতে পরাগায়ন করতে হচ্ছে। বিভিন্ন রোগবালাইয়ের জন্য কীটনাশক স্পে করতে হচ্ছে। ফলন ভালো হলে লাখ টাকার ওপরে বীজ বিক্রির আশা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, দাম ভালো পাওয়ায় এবছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে। কৃষকরা এবছর প্রায় ৩৫০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে হরিরামপুরে কৃষকরা এবার প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করবে। যার বাজারমূল্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।