
বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবী উপজেলার হাজার হাজার প্রান্তিক মানুষের। বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের কাছে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবী প্রান্তিক জনগোষ্ঠির।
জানাগেছে, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর মুহাম্মদ আশরাফুল আলম আমতলী উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। বদলে যেতে শুরু করে আইন শৃংখলা, উন্নয়নের অগ্রগতি ও সামাজিক বন্ধন। অল্প দিনের মধ্যেই তার সততা ও দক্ষতায় কঠোর প্রশাসকের সুনাম- সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। উন্মুক্ত হয়ে যায় তার কার্যালয়ের মুল ফটক। সকল শ্রেনীর মানুষের আশ্রয়স্থল হয় তার কার্যালয়। তাকে কাজে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন ইউএনও। তার এমন কর্মদক্ষতায় পাল্টে যায় আমতলীর দৃশ্যপট বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল ইসলাম তালুকদার। গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আমতলীর মানুষের আর্শ্বিবাদ হয়ে ওঠেন তিনি। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, ঘরবাড়ী ভাংচুর, জমি দখল, চাঁদাবাজী, খেয়াঘাট দখল ও সকল কিছুই কঠোর হস্তে দমন করেছেন তিনি বলে জানান রাশিমুল হক রিমন। গত ২৬ মার্চ রাতে আমতলী পৌর শহরের ইসমাইল শাহ’র মাজারে দুর্বৃত্ত¡রা আগুন ধরিয়ে দেন। তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে তা কঠোর হস্তে প্রতিহত করেছেন। পরে তিনি উপজেলা পরিষদের অর্থায়নের মাজারের ক্ষতিগ্রস্থ ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন বলে জানান মাজারভক্ত মিজানুর রহমান তালুকদার। গত ২ বছর ৪ মাসে তিনি (ইউএনও) আমতলী উপজেলার অন্তত অর্ধ লাখ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সেবা দিয়েছেন। যা আমতলীর ইতিহাসে বিরল। তার এমন অভুতপুর্ব কাজে খুশি আমতলীর সর্বস্তরের মানুষ বলে জানান প্রভাষক জয়নুল আবেদীন। তিনি হয়ে ওঠেন উপজেলার প্রান্তিক মানুষের মানবতার ফেরিওয়ালা। এতো কিছুর পরেও একটি কুচক্রি মহল তাকে বদলি করতে ওঠেপড়ে লেগেছে। গত বছর ১৮ ডিসেম্বর তাকে কুমিল্লায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে বদলী করা হয়। এ বদলির খবর পেয়ে আমতলী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শতাধিক ব্যানারে অন্তত অর্ধ লাখ মানুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আন্দোলনের চাপে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলমকে আমতলীর ইউএনও পদে বহাল রাখেন।
গত ২১ এপ্রিল কুমিল্লার আদেশ বাতিল করে ভোলা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে আবারো বদলী করেন। এ খবর আমতলী প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌছা মাত্রই তারা ফুসে উঠেছে। বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবী প্রান্তিক জনগোষ্ঠির। বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করলে তারা কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
হতদরিদ্র অটোরিক্সা চালক আব্দুল মজিদ মীর বলেন, ইউএনও স্যারে ভালো মানুষ। স্যারের হুনছি বদলি হরছে। এ বদলি মোরা মানি না। বদলীর আদেশ বাতিল না করলে মোরা আবারো আন্দোলন হরমু।
আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম কাওসার মাদবর বলেন, অমাতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এমন বদলির আদেশ মেনে নেয়া যায় না। দ্রুত ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবী জানান তিনি।
আমতলী পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির ফকির বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একজন সৎ, দক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। কিন্তু কেন তাকে বারবার বদলির করা হচ্ছে ? তার দায়িত্বশীল কাজ ও ন্যায় পরায়নতায় গত দুই বছর ৪ মাস আমতলীর সর্বস্তরের মানুষ ছিল নিরাপদে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলির আদেশ দ্রুত প্রত্যাহারের দাবী জানান তিনি। যদি বদলীর আদেশ প্রত্যাহার না করা হয়, তবে কঠোর আন্দোলন করা হবে।