আফরুজা আক্তার আভা: , আপলোডের সময় : শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫ , আজকের সময় : শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫

ছোটদের বড় ভাবনা: রাজধানীর পরিবেশ দূষণ নিয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উদ্রেক

পাঠ্যবই থেকে পাওয়া জ্ঞান উদ্রেক জাগিয়েছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে। আর তাই গতকাল ৫ ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে সামনে রেখে সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল সাভার রাজাসন ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের ছোট্ট শিক্ষার্থীরা।

রাজধানী ঢাকা এবং বিদ্যালয়ের আশেপাশে শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ এবং সার্বিক পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে প্রতীকী চিত্রাঙ্কন, প্লাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শনী, শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি এবং মানব বন্ধন পালন করেছে উক্ত শিক্ষার্থীরা।


শিক্ষার্থীদের ভাবনা থেকে বাদ যায়নি সাভার বনসাই নদীর মরণ অবস্থাও, নদী সুরক্ষা বিষয়ক দাবিও উঠে এসেছে তাদের কর্মসূচিতে।

বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী রাস্তা গুলোতে উচ্চস্বরে অপ্রয়োজনীয় হর্ন ও শব্দ দূষণ শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।

শুধু শব্দ দূষণ নয় সার্বিক পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য জনগণের সচেতনতার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের কার্যকর ব্যবস্থার বিষয়েও নানা দাবি তুলেছে তারা।

শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ এবং বিদ্যালয়ের সহযোগিতার বিষয়ে রাজসন ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ, জনাব আব্দুর রব সুমন বলেন, “পাঠ্য বইয়ের বাহিরে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে আমরা তাদেরকে সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। কো কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস এবং এ ধরনের বিষয়গুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট হলে শিক্ষার্থীরা আরও দায়িত্বশীল হবে, সচেতন হবে। এই প্রচেষ্টারই একটি অংশ হিসেবে পরিবেশ দিবসকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীকে আগ্রহ প্রকাশের প্রেক্ষিতে এই কনসার্ন ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়েছে।”

বাংলাদেশে শব্দ দূষণ প্রতিরোধ আইন ২০০৬ অনুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক এলাকাগুলোতে উচ্চস্বরে হর্ন বাজানো ও মাইকিং করা দণ্ডনীয় অপরাধ।
শব্দ দূষণ প্রতিরোধে প্রণয়ন করা এই আইন এখনো শুধুই কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ।

এছাড়াও বসবাস উপযোগী পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০১০ এর মত বিভিন্ন নীতিমালা এবং আইন প্রণয়ন করা হলেও বাস্তবায়ন হয়না স্বয়ং রাজধানীতেও।

গতকাল ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এই উদ্রেগ আমাদের আবারো স্মরণ করিয়ে দেয় জলবায়ু সংকটের কথা। বিশ্বজুড়ে চলা পরিবেশ দূষণ এবং কার্বন নিঃসরণ রোধ করা নিয়ে ঘটা করে নানা আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও আলোচনার আসর বসলেও বাস্তবিক অর্থে সেটার কার্যকর কোন প্রয়োগ দেখা যায় না আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও।

দূষণ সংক্রান্ত নানা রোগ, স্বাস্থ্য জটিলতা এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রয়োজনে শুধু জনগণ নয় সচেতন হতে হবে রাষ্ট্রকেও। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের উদ্যোগ এবং পূর্বের জলবায়ু ও পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে প্রণয়ন করা আইনসমূহের কার্যকর বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে এই কনসার্ন ক্যাম্পেইনের এর সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা।