
মামলার বাদীকে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বাড়ীতে হামলা করে মারধর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলার বাদী শিউলী বেগম এমন অভিযোগ করেছেন। আহতদের স্বজনরা উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামে শনিবার সকালে।
জানাগেছে, উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের আনোয়ার মোল্লা ও নুর হোসেন মোল্লার মধ্যে ১৫ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। ওই জমি নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল আনোয়ার মোল্লা ও তার লোকজন শিউলী বেগম ও তার মা হাসিনা বেগমকে মারধর করে।
এ ঘটনায় গত ২৭ এপ্রিল শিউলী বেগম বাদী হয়ে আনোয়ার মোল্লাকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নামে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে মামলা হয়। আদালতের বিচারক ওই মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। গতকাল শুক্রবার রাতে পুলিশ এ মামলার আসামী আনোয়ার মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। এতে ক্ষুব্দ হন আনোয়ার মোল্লার স্বজনরা। শনিবার সকাল ৬ টার দিকে আনোয়ার মোল্লার ছেলে জাকির মোল্লা, সোহাগ মোল্লা ও নাতি জাহিদ মোল্লাসহ ১০-১৫ জন মামলার বাদীর বাড়ীতে হামলা করে। মামলার বাদী শিউলী বেগমের অভিযোগ জাকির মোল্লা , সোহাগ মোল্লা ও জাহিদুল মোল্লাসহ ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী এসে তাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় তার ভাই সফিক মোল্লা ও তার বাবা নুর হোসেন মোল্লা এগিয়ে আসলে তাকেসহ তাদের লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। ওই সময় তারা (সন্ত্রাসীরা) ঘরের আলমারী ভাংচুর করে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা ও স্বর্নালংকার নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জাহিদ মোল্লা (১৭) আহত হয়েছে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী দুলাল ও রহিম মোল্লা বলেন, ডাকাডাকির শব্দ শুনে মামলার বাদীর বাড়ী এসে দেখি সাইদ মোল্লা রক্তাক্ত অবস্থায় পাটিতে শুয়ে আছে। আর শিউলী ও নুর হোসেন ব্যথায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। তাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। তারা আরো বলেন, আমার এসে দেখি জাকির মোল্লা ওই বাড়ী থেকে চলে যাচ্ছেন।
মামলার বাদী শিউলী বেগম বলেন, গত ১৫ এপ্রিল আনোয়ার মোল্লা ও তার লোকজন আমাকে এবং আমার মাকে কুপিয়ে জখম করেছে। ওই ঘটনায় আদালতে মামলা করেছি। গতকাল শুক্রবার মামলার আসামী আনোয়ার মোল্লাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ ক্ষুব্দ হয়ে শনিবার সকালে জাকির মোল্লা, সোহাগ মোল্লা ও জাহিদ মোল্লাসহ ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী এতে আমাকে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় আমার বাবা ও ভাই এগিয়ে আসলে আমাকেসহ তাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের মারধর করেই তারা খ্যান্ত হয়নি আমার ঘর ভাংচুর করে ঘরে থাকা দুই লাখ ১০ হাজার টাকা ও এক ভরি স্বর্নালংকার নিয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে সোহাগ মোল্লা ধর্ষণ চেষ্টা, মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে এমন প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন?
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোঃ মশিউর রহমান বলেন, আহত সফিক মোল্লার হাতে ধারালো আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এছাড়া আহত শিউলী ও নুর হোসেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহৃ আছে। তাদের যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। গ্রেপ্তারকৃত আসামী আনোয়ার মোল্লার স্বজনরা বাদীর বাড়ীতে হামলা করেছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।