রায়হান চৌধুরী (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫ , আজকের সময় : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

ডিপিএড প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতায় শিক্ষক নেতাদের ঘুষ বানিজ্য

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশনের (ডিপিএড) প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতা উত্তোলনে শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করেছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা এর দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, মুরাদনগরে ১১২ জন শিক্ষকের ডিপিএড প্রশিক্ষণের বকেয়া ভাতা উত্তোলনের কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষক নেতারা উপজেলা শিক্ষা অফিস ও হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ভাঙিয়ে প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকা করে প্রায় ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। এই অর্থ উত্তোলনের মূল হোতা হিসেবে অভিযোগ উঠেছে বড়ইয়াকুড়ি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা সমিতির কথিত সভাপতি জামাল হোসেন এবং রাজাবাড়ি স্কুলের বরখাস্তকৃত শিক্ষক আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে। উত্তোলন করা টাকার একটি সামান্য অংশ উপজেলা শিক্ষা ও হিসাব রক্ষণ অফিসে দিয়ে বাকি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ ভাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫ জন শিক্ষক বলেন, আমরা টাকা উত্তোলন করে সমিতির সভাপতি জামাল হোসেনকে দেওয়ার জন্য আব্দুল জলিলকে বুঝিয়ে দেই।

ভুক্তভোগী সহকারি শিক্ষক তাসলিমা আক্তার তিনিসহ আরও কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, “ডিপিএড স্কেলের বকেয়া ভাতার জন্য সহকারী শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম আমাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা করে নিয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষক সমিতির কথিত সভাপতি জামাল হোসেন ও রাজাবাড়ি স্কুলের বরখাস্তকৃত শিক্ষক আবদুল জলিল বিষয়টির সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রপাকান্ড ছড়ানো হচ্ছে।

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন এ বিষয়ে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিল তৈরির জন্য তার অফিসের কাউকে টাকা দিতে হয় না। তিনি আরও জানান, শিক্ষক আব্দুল জলিল এই বিলের বিষয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছেন এবং বিভিন্ন জনকে দিয়ে তার কাছে তদবিরও করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, তিনি বা তার অফিসের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নন। তিনি এটিকে একটি বড় ধরণের “অপরাধ” বলেও মন্তব্য করেছেন।

কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস পাল বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না, তবে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।