রংপুর ব্যুরো: , আপলোডের সময় : বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫

রংপুরে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ৫

রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর ছয়আনি এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাঁদের রিমান্ড শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। আজ বুধবার বিকাল ৪টার দিকে গঙ্গাচড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে আসামিদের হাজির করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম।

এর আগে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করা আসামিরা হলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিংগেরগাড়ি মাঝাপাড়া গ্রামের মো. ইয়াছিন আলী (২৫), একই উপজেলার মাগুড়া শ্রীপাড়ার স্বাধীন মিয়া(২৮), দক্ষিণ চাদখানা মায়াপাড়ার আশরাফুল ইসলাম(২৮),উত্তর সিংগেরগাড়ি পাঠানপাড়ার এস এম আতিকুর রহমান খান আতিক (২৮) ও দক্ষিণ সিংগেরগাড়ি চওড়াপাড়ার সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করায় উপজেলার আলদাদপুর ছয়আনি এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী রবীন্দ্রনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১ হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা করেন।

পুলিশ বলেন, গত ২৬ জুলাই শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি করে আলদাদপুর ছয়আনি গ্রামের এক হিন্দু পরিবারের কিশোর পোস্ট দেয়। বিষয়টি ভাইরাল হলে স্থানীয় মুসলিম জনতার মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এরপর থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিস্থিতি। প্রথমে একটি মিছিল কিশোরের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। রাত ১০টার দিকে তার এক স্বজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

পরদিন রবিবার দুপুরে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দিয়ে কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোর পুনর্বাসনকেন্দ্রে পাঠানো হয়। এরপর ওই দিনই নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিংগেরগাড়ি পারেরহাট, বাংলাবাজার, মাগুড়া ও গঙ্গাচড়া থানা এলাকার খলেয়া, বেতগাড়ীসহ অন্যান্য এলাকার জনতা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কটূক্তিকারীর ফাঁসির দাবিতে মিছিল বের করে। শেষে হিন্দুপল্লীর বাড়িঘরে ভাঙচুর করে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ১৫ বান্ডিল টিন ও ৩০ বস্তা শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২০টি মাটির চুলা ও চারটি টিউবওয়েল মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের ঘরবাড়িগুলো মেরামত করতে যা কিছু লাগবে, তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করব। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাড়িঘর মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।