
ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী তার রাজনৈতিক জীবনের যাত্রা শুরু করেছেন পরিবার থেকে। তিনি জানান, হাতিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠার কারণে রাজনৈতিক চেতনাই তার শৈশব থেকেই গড়ে উঠেছে। দাদা মরহুম আলহাজ্ব আজহার উদ্দিন আহাম্মদ মিয়ার সংগ্রামী ইতিহাস ও জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ড তার প্রাথমিক প্রেরণার উৎস।
ফোজিয়া সাফদার সোহেলী উল্লেখ করেন, দাদা, বাবা ও চাচাদের জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডই তার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। বিশেষ করে তার বাবার রাজনৈতিক আদর্শ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দর্শন দ্বারা প্রভাবিত। বাবার কাজ, যেমন জব্বারিয়া খাল কাটার মাধ্যমে মানুষের জীবন সহজ করা, তার জন্য রাজনৈতিক আদর্শের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
হাতিয়ার উন্নয়নের ক্ষেত্রে ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী সোহেলী প্রধান অগ্রাধিকার দিয়েছেন মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে। তিনি বলেন, “হাতিয়ার মানুষকে দীর্ঘদিন অবহেলা করা হয়েছে। তাই আমার লক্ষ্য—উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার বিস্তার এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।” তিনি তার পরিকল্পনায় তারেক রহমানের ৩১ দফার জাতীয় কর্মসূচিকে হাতিয়ার জন্য প্রযোজ্য হিসেবে নেন।
স্থানীয় জনগণের প্রধান সমস্যা হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন নদী ভাঙ্গন, নিরাপদ যাতায়াতের অভাব, স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা, শিক্ষার সীমিত সুযোগ, কর্মসংস্থানের ঘাটতি এবং নারীর সামাজিক অংশগ্রহণে বাধা। এসব সমাধানে তিনি পরিকল্পনা করেছেন—সুষ্ঠু নৌ-যান ব্যবস্থা, প্রতিটি ইউনিয়নে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি শিক্ষার ব্যবস্থা, এবং ক্ষুদ্র ঋণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি।
নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিয়ে ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী জানান, নারী উন্নয়ন ছাড়া সমাজ উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি নারী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে নারীদের ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করেন এবং এর পেছনে তারেক রহমানের ৩১ দফার গুরুত্বকেও উল্লেখ করেন।
রাজনৈতিক জীবনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, “অবিরাম বাধা, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং নারী হওয়ার কারণে অতিরিক্ত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু সততা, ধৈর্য এবং জনগণের ভালবাসাই আমাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।”
তরুণদের রাজনীতিতে যুক্ত করতে সোহেলী বলেন, সততা ও আদর্শের মাধ্যমে যুবশক্তিকে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। তিনি তরুণদের রাজনৈতিক শিক্ষা, উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ এবং দেশপ্রেমিক মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।
হাতিয়ার অবকাঠামো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে তার প্রস্তাবগুলো হলো—নিরাপদ ফেরি ও সী-ট্রাক সার্ভিস, আধুনিক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মানসম্মত স্কুল ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং নদীভাঙন রোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ।
শেষে, সমালোচনার বিষয়ে ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী বলেন, “আমি সমালোচনাকে ভয় পাই না। বরং তা নিজেকে উন্নত করার আয়না। গঠনমূলক সমালোচনা আমাকে আরও দৃঢ় ও কার্যকরভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে সাহায্য করে।”
তিনি তার রাজনৈতিক দলের ভিশন ও লক্ষ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে মাঠে-মহল্লায় কাজ করছেন, তরুণ ও নারীদের সাথে যুক্ত আছেন, এবং তারেক রহমানের ৩১ দফার বাস্তবায়নকে হাতিয়ার উন্নয়নের রোডম্যাপ হিসেবে গ্রহণ করেছেন।