নান্দাইল প্রতিনিধি : , আপলোডের সময় : শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ , আজকের সময় : রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নান্দাইলে ইমাম পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মসজিদের ইমাম পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর নান্দাইল পৌরসভার উত্তর বালিয়াপাড়া জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে নান্দাইল ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনার পর দুইটি বাড়িতে হামলার ঘটনাও ঘটে। আহতদের মধ্যে গেনু মিয়া (৫৫), মাসুম মিয়া (২৫), কামরুজ্জামান (৪০), মাফিজুরর রহমান (২৫) ও বাহাদুর মিয়াকে (২৫) উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই মহল্লার একটি মসজিদে দীর্ঘ দিন ধরে পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ পড়িয়ে আসছিলেন মাওলানা আবুল খায়ের। তিনি গত ১৫ আগস্ট জুমার নামাজ পড়িয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের কাছ থেকে বিদায় নেন আর এই মসজিদে নামাজ পড়াবেন না বলেন। কিন্তু অনেকেই ওই ইমামের কথায় সায় না দিয়ে নামাজ পড়িয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু একটি পক্ষ ইমাম খায়েরের চলে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন।

এ নিয়ে পরবর্তীতে দুইটি পক্ষ তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি পক্ষ ঘোষণা দেয় পূর্বের ইমাম মাওলানা খায়েরের পরিবর্তে মাওলানা আনোয়ার হোসেন নামে একজন এখন থেকে ইমামতি করবেন। এতে বাধা দেয় অন্য পক্ষ। এ অবস্থায় এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয় কিছু মুসল্লি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করলে ইউএনও আগের ইমামই নামাজ পড়াবেন বলে সিদ্ধান্ত দেন।

এ সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই ওই মসজিদে নিরাপত্তার জন্য যায় ওসির নেতৃত্বে একটি দল। তারা জুমার নামাজও পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মসজিদের ওয়াজের সময় পুরাতন ইমামের একটি কথার বিরোধিতা করেন নতুন ইমাম আনোয়ার হোসেন। কিন্তু এই বিরোধিতাতে নারাজ হন বেশ কিছু মুসল্লি। এতে মসজিদের ভেতরেই উত্তেজনা দেখা দিলে মুরব্বিদের হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষ শান্ত হন। নামাজ শেষে এরই জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে আবার উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষই লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় উপস্থিত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। হামলায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহবুব জানান, দুই পক্ষের মধ্যে গোলযোগ হতে পারে এমন আঁচ করতে পেরেই পুলিশ মোতায়েন ছিল। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ওই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে। পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এখনো পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।