
দেশের কিংবদন্তী লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া দশটায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শিল্পীর বড় ছেলে ইমাম নিমেরি উপল চ্যানেল আই অনলাইনকে খবরটি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন লড়াই করে মা আজ রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যু পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে আমরা পারিবারিকভাবে কথা বলছি, জানাজা দাফনসহ যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে জানিয়ে দেয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন ফরিদা পারভীন। কিছুদিন ধরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, সপ্তাহে দুই দিন তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হয়।
গেল সপ্তাহেই শিল্পীর বড় ছেলে জানান, নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় মাকে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তখন চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সবশেষ লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় বর্ষীয়ান এই শিল্পীকে। গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। উপল জানান, বর্তমান সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নিয়মিত খোঁজ রাখতেন চিকিৎসাধীন ফরিদা পারভীনের। পাশাপাশি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার নিয়মিত খোঁজ খবর নেয়া হত।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত দিয়ে সংগীতজীবন শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে পরিচিতি পান তিনি। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালনসংগীতে তালিম নিয়ে ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনসংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তী।
শিশুদের লালন সংগীত শেখানোর জন্য তিনি অচিন পাখি স্কুল নামে একটি গানের স্কুল গড়ে তুলেন।
সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। পরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান তিনি।