
গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর দৌড়ে ফ্যাসিবাদের দোসর, পল্টন মডেল থানার ছাত্র ও জনতা হত্যা মামলা দায়ের আসামী মোঃ শামছুদ্দোহা। গত ৪ আগস্ট ২০২৪ এ গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর অফিস কক্ষে সাবেক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ও আন্দোলনকারীদের দাবিয়ে রাখতে মহা-পরিকল্পনা ও অর্থ যোগান দেয়ার বিষয় সিদ্ধান্ত হন। এই মোঃ শামছুদ্দোহা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলের গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান মুন্সী ওরফে টিপু মুন্সির ভায়রা। ২০১৬ সালে মোঃ হাফিজুর রহমান মুন্সী ওরফে টিপু মুন্সি প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালীন সবচেয়ে বেশি লোভনীয় ও অধিক প্রকল্পের সার্কেল সাভার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছিলেন ফ্যাসিবাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ন সরকারি আবাসন প্রকল্পের দশ হাজার কোটি টাকার দরপত্র মূল্যায়ন করেন ও কুশলী নির্মাতা, NDE, সহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের কাজ ভাগিয়ে দিয়ে টেন্ডার বানিজ্যের সিন্ডিকেট করে শত কোটি হাতিয়ে নেন তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এই শামছুদ্দোহা।
অনুসন্ধানে জানা যায় ছাত্র জীবনে শামছুদ্দোহা ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন পরবর্তীতে বুয়েটে ছাত্রলীগের ধারা অব্যাহত রেখে হল শাখা ছাত্র লীগের নেতা নির্বাচিত হয়। সেই শামছুদ্দোহা ২০০৯ সাল বর্তমান জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সরকারের আমলেও দাপটের সাথে রয়েছেন বহাল তবিয়তে ও ধরা ছোয়ার বাইরে।
হাফিজুর রহমান মুন্সী চলে ঢাকার বাহিরে চলে যাওয়ার পর শামছুদ্দোহা দায়িত্ব পালন করেন, ঢাকার রমনার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে, মহাখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী, নারায়নগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সাভার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পরে ময়মনসিংহে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হয়ে।
সাবেক ফ্যাসিবাদ সরকারের সাবেক প্রতি মন্ত্রী মোঃ শরীফ আহমেদের সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তুলে ময়মনসিংহ জোন লুটেপুটে খান তিনি তার সাথে অন্যতম সহযোগী ছিলেন তৎকালীন ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুজ্জামান চুন্নু।
ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগে চার গুন এপিপি বরাদ্দ বেশি বাগিয়ে নেন এবং ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগে বিশ কোটি টাকা বকেয়া করেন সাবেক প্রতি মন্ত্রী শরীফ আহমেদের নির্দেশে যার প্রাক্কলন ও টেক অনুমোদন করেন শামছুদ্দোহা। তার নির্দেশে চলে গোটা ময়মনসিংহ জোন। তখন ময়মনসিংহ জোনের সকল ডিভিশনের মডেল মসজিদের নির্মান প্রকল্পের কাজের দরপত্র আহবান প্রক্রিয়ায় প্রাক্কলন অনুমোদন দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন শামছুদ্দোহা। সাবেক পূর্তমন্ত্রী শরীফ আহমেদের লোকজনকে কাজ দিতে ময়মনসিংহ গণপূর্ত বিভাগে এপিপির কাজ এলটিএম পদ্ধতির পরিবর্তে ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করার অনুমোদন দেন শামছুদ্দোহা। মন্ত্রীর নির্দেশে এই ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর শামছুদ্দোহা এখন বহাল তবিয়তে ঢাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এবং টাকার বস্তা নিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় লবিং তদবির করছেন। বর্তমানে শামছুদ্দোহা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সংস্থাপন ও সমন্বয় হওয়ার সুবাদে ঢাকায় মন্ত্রণালয় জোর তদবির করতে পারছেন খুব সহজে। তাই ঢাকার ভিতরের অনেক নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকে টাকা তুলে প্রধান প্রকৌশলীর দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অনেক প্রকৌশলী।
শামছুদ্দোহা সাবেক পূর্তমন্ত্রী শরীফ আহমেদ কে ও নিজ জেলা জামালপুর হওয়ায় মির্জা আজমের হাত ধরে মোসলেহউদ্দিনকে সরিয়ে ঢাকা গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পোস্টিং বাগিয়ে নেন। তারপর সেই মিরপুরের ও সাভারের কাজে হস্তক্ষেপ করেন। গণপূর্ত সম্পদ বিভাগের একটি আলোচিত একশত বিশ কোটি টাকার টেন্ডার আওয়ামীলীগ ফ্যাসিবাদ সিন্ডিকেটকে দেয়া হয় তৎকালীন সম্পদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন মোঃ নাসির উদ্দিন খান এই নাসির উদ্দিন খান শামছুদ্দোহার প্রভাবে মাছ চুরির মত জঘন্য অপরাধ করে বিভিন্ন পত্রিকায় শিরোনাম হন।
মোঃ শামছুদ্দোহা নামে-বেনামে শত কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ডি ব্লকে একটি ফ্ল্যাট, বারিধারায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে, জামালপুর জেলার শরিষাবাড়িতে একটি বিলাসবহুল বাড়ি নির্মান করেছেন এবং শরিষাবাড়িতে এক দাগে দশ একর জমি ক্রয় করছেন রির্সোট নির্মান করার জন্য যা ২০২৫ সালে আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা মির্জা আজম কে দিয়ে উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে সরকার পতন হলে আর তা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে মোঃ শামছুদ্দোহার কাছে জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি এমনকি তাকে বার্তা পাঠালেও কোন রেসপন্স করেননি।