।। মাহবুবুর রহমান বাবুল ।। , আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা, আপনি শিক্ষক সম্প্রদায়ের বাতিঘর !

বৈষম্যবিলোপ বৈষম্যের গ্যাড়াকলে জাতির কোন অর্গান আর থাকতে চায়না ! স্বাধীনতার তেপান্ন বছরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দফতর অধিদপ্তরে জমেছে বৈষম্যের পাহাড় । ফলে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে জাতি দফায় দফায় ঝড়-ঝঞ্ঝা মোকাবেলা করেছে অত্যন্ত ধৈর্য্যের সাথে। ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ দিনের জঞ্জাল নিরসন কল্পে সরকার বাহাদুর বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করেছে যা রাষ্ট্র যন্ত্রের নি:সন্দেহে ইতিবাচক দিক। এবং সেই সোনালি ফসলের অপেক্ষা করছে। রাষ্ট্রের সচেতন মহল ভেবে ছিল শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ও একটি যুগোপযোগী সংস্কার কমিশন হবে যেখানে দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধান হবে, তরুণ প্রজন্ম একটি বিশ্ব নন্দিত শিক্ষা কারিকুলাম পাবে এবং জাতি গড়ার অমিয় কারিগরেরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে। অর্থাৎ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ছাত্র শিক্ষক এর সুবিধা ভোগ করবে। কিন্তু বিধি বাম তা’ আর হয়নি। বর্তমান যে উপদেষ্টা পরিষদ রয়েছে সেখানে সিংহভাগই রয়েছে শিক্ষক। পুরো জীবন কাটিয়েছেন মানুষ গড়ার কাজে। এই পর্ষদ দেখে দেশের শিক্ষক সম্প্রদায় হতাশা বঞ্চনার থেকে মুক্তি মিলবে এবার এতে নানা বিশেষণ যুক্ত হয় এবং অপেক্ষার প্রহর গুনে। চলতি বছরে প্রথমার্ধে টানা বাইশ দিনের আন্দোলনের ফসল হিসাবে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের অকৃত্রিম বদান্যতায় ঈদ বোনাস ২৫% থেকে ৫০% উন্নীত করে এবং নি:সন্দেহে শিক্ষক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ান। এই সজ্জন উপদেষ্টা চলতি বাজেটে শিক্ষকদের অন্যান্য অসংগতি গুলো দূর করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন। সেই অনুযায়ী চলতি বাজেটে শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের দাবি সমুহ স্থান পায়। অর্থাৎ ২০% বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি ও কর্মচারীদের জন্য ৭৫% ঈদ বোনাস । বাজেটের পরবর্তী সময় যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের আশ্বাসে চির ধরতে শুরু করে । কিন্তু দমে যাইনি রাজপথের সেই পোড়খাওয়া শিক্ষকেরা। তাদের প্রবল চাপের মুখে স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ও কারিগরি দফতর থেকে পার্সেন্ট আকারে মোট টাকার পরিমাণ জমা দেওয়া হয়। সেই প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে এবং সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতি বুঝে নিতে আজ জাতির মহান পেশার কারিগরেরা পঞ্চম দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে ইট পাথরের নগরীতে এবং কয়েকজন ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা, আপনি একজন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের ব্যক্তিত্ব যা প্রিয় স্বদেশের নাগরিক হিসাবে গর্ববোধ করি। আপনি সারাজীবন মানুষ গড়ার কাজে নিজকে নিয়োজিত রেখে দেশের জন্য সন্মান বয়ে এনেছেন এবং বৈষম্য নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু আজকের আপনার ভূখন্ডে এই সন্মানিত জাতি সকলের নিকট উপহাসের পাত্র হিসাবে পরিগনিত হচ্ছে যা রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত মানহানিকর। আপনি এই উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রিয় স্বদেশের অভিভাবক। আপনি একজন অন্যতম নীতি নির্ধারক। সামান্য কিছু পাবার আশায় আপনার শাসনামলে শিক্ষক সম্প্রদায় রাজপথে দিবা রাত অতিবাহিত করবে তা’ জাতি কখনো আশা করিনি। আপনার ঈশারায় একটা জনগোষ্ঠী ভাগ্যে ভালো কিছু হবে এটাই সর্ব মহলের আশাবাদ। কেন তারা রাজপথে থাকবে ! যাদের ঘামের বদৌলতে পুলিশ আর্মি সহ সিভিল সার্ভিসের ক্যাডাররা জন্ম নেয়, আজ তাদের দ্বারা এই প্রিয় শিক্ষক সম্প্রদায় মার খাবে তা কখনো আপনি ও চাননা। শিক্ষক সম্প্রদায়ের ভাগ্যে উন্নয়নে আপনিই সর্বশেষ কান্ডারী যার হাত ধরে তীরে পৌছবে এই বঞ্চিত শিক্ষক সম্প্রদায়। প্লিজ মান্যবর উপদেষ্টা একটু ভাবুন, জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনি এসেছিলেন আপনি এখন এই শিক্ষা এবং শিক্ষক সম্প্রদায়ের ডাল ভাতের একটু ব্যবস্থা করে যান, আমত্যু স্মরিত হবেন অত্যন্ত সন্মানের সাথে। জয় হোক মানবতার জয় হোক শিক্ষকতা পেশার।