জমি কেনার জন্য তিন লাখ টাকা যৌতুক দিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী কালু হাওলাদার স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে (৪০) চোখে মরিচের গুড়ি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তাকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। শুক্রবার দুপুরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার বিকেলে বরগুনার আমতলী উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা গ্রামের হানিফ হাওলাদারের মেয়ে শাহিনুর বেগমের সঙ্গে আমতলীর ছোট নীলগঞ্জ গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে কালু হাওলাদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে যৌতুক দাবির অভিযোগ রয়েছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি কালু হাওলাদার জমি ক্রয়ের জন্য স্ত্রীর কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। শাহিনুর বেগম বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামী কালু হাওলাদার তার স্ত্রীর চোখে মরিচের গুড়ি ছিটিয়ে দেয় এবং তার নুনুন্দা হানিফ মুসুল্লী ও ননদ রেবেকা বেগমের সহায়তায় বেধরক মারধর করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে।
শুক্রবার সকালে স্বজনরা খবর পেয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ গিয়ে আহত শাহিনুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
শাহিনুর বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী যৌতুক দাবি করে আসছে। টাকা না দিলেই নির্যাতন চালায়। এবার তিন লাখ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার চোখে মরিচের গুড়ি দিয়ে বেধরক পেটায়।
বাবা হানিফ হাওলাদার বলেন, জমি কিনতে জামাতা আমার মেয়ের কাছে তিন লাখ টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেয়ায় মেয়েকে নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখে। আমি দোষীদের শাস্তি চাই।
তবে স্বামী কালু হাওলাদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দিয়েছি, যৌতুকের কোনো ব্যাপার নয়।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিনহাজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আহত শাহিনুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম রয়েছে। তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।