রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ক্লিন ইমেজধারী আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মনোনয়নের আশ্বাস দিলেন জাতীয় পার্টি হতদরিদ্র কর্মহীনরা বাদ, ভেকুতে কাজ, কাবিটা প্রকল্পে অনিয়মের পাহাড় নান্দাইলে ইমাম পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫ আমতলীতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ ভূতাইলের মাঠে দর্শকের উল্লাস, ইছাপুরা পেল নগদ ২ লাখ টাকার পুরস্কার সাংবাদিক নেতা সুশান্ত সাহার বাবা বাবু স্বপন সাহার পরলোক গমন: সাংবাদিক কমিউনিটির শোক প্রকাশ বেতাগীতে গ্রীন পিস ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইউনুছ সিকদারের ইন্তেকাল ভোটের মাধ্যমে মসজিদের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত কলাপাড়ায় চাঞ্চল্যকর ডাকাতি ও গণধর্ষণ মামলার তিন আসামি গ্রেফতার

হতদরিদ্র কর্মহীনরা বাদ, ভেকুতে কাজ, কাবিটা প্রকল্পে অনিয়মের পাহাড়

মনজুর মোর্শেদ তুহিন, (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৫৭৫৫ বার পঠিত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্থার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামে কাগজে-কলমে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও বাস্তবে তার অল্প অংশ ব্যয় করে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে স্থানীয় হতদরিদ্র শ্রমিকদের পরিবর্তে ভেকু দিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করায় একদিকে স্থানীয় কর্মহীন মানুষেরা কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অপরদিকে নিম্নমানের কাজ হওয়ায় বর্ষার পানিতে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৪ লাখ টাকা তিনটি প্রকল্পের মধ্যে খাজুরা কবিরের দোকান সংলগ্ন রাস্তা থেকে দুলালের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ৪৫০ মিটারের জন্য ৬ লাখ ৫০ হাজার, ওয়াপদা বেরিবাঁধ সংলগ্ন পানকৌড়ি কোম্পানির প্লট থেকে দুলালের বাড়ি পর্যন্ত ৪০০ মিটারের জন্য ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং কবিরের দোকান থেকে পনু হাওলাদারের বাড়ি পর্যন্ত ৩০০ মিটার রাস্তা নির্মাণে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম দুটি রাস্তার প্রস্থ ৩.৫ মিটার ও উচ্চতা ১.২ মিটার নির্ধারিত ছিল।

সরেজমিনে দেখা যায়, নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী প্রস্থ ৩.৫ মিটার হওয়ার কথা থাকলেও রাস্তার চওড়া হয়েছে মাত্র ২.৫ থেকে ৩ মিটার। আবার উচ্চতাও কোথাও সঠিকভাবে তোলা হয়নি। ১.২ মিটার উচ্চতার বিপরীতে কাজ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০০ থেকে ৮০০ মিলি মিটার। নরম ডোবা-নালার মাটি দিয়ে কাজ করায় প্রথম বর্ষাতেই রাস্তার দুই ধারে ধস নেমেছে। কোমরসমান কাদা জমে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ দুই মাস স্কুলে যেতে পারেনি।

কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, বরাদ্দের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ অর্থও ব্যয় করা হয়নি। কেবলমাত্র তিন লাখ টাকার মতো খরচে ভেকু ব্যবহার করে ৭-১০ দিনের মধ্যে একসঙ্গে সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে বরাদ্দের অধিকাংশ অর্থের কোনো হিসাব নেই।

কাবিটা প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো হতদরিদ্র গ্রামীণ মানুষ, বিশেষ করে অবরোধকালে কর্মহীন জেলেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী এসব কাজে শ্রমিক নিয়োগ বাধ্যতামূলক হলেও বাস্তবে পুরো কাজ ভেকু দিয়ে করা হয়েছে। নিয়মভঙ্গের ফলে স্থানীয় শত শত কর্মহীন মানুষ আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ কবির বলেন, আগে রাস্তা চলাচলের মতোই ছিল। এখন উঁচু করে দিলেও কাদা জমে আগের চেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছে। হাঁটার মতো রাস্তা নেই।

স্থানীয় জেলে শাহজাহান মাঝি বলেন, সাগরে সব সময় মাছ ধরার কাজ থাকে না তখন জেলে কার্ডের চাল দিয়ে সংসার চালাই। রাস্তার কাজের তালিকায় নাম থাকলে অবশ্যই কাজ করব।

অন্য এক বাসিন্দা নেছার উদ্দিন জানান, যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছে সে পরিমাণ কাজ হয়নি। শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও সব কাজ করেছে ভেকু দিয়ে।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোকছেদুল আলম বলেন, রাস্তাটির অবস্থা খুবই দুর্বিষহ ছিল, বর্ষার মৌসুমে হাঁটার অবস্থা ছিল না। যথা সময়ে কাজটি পুরোপুরি শেষ হয়েছে তবে বর্ষা মৌসুমে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় পানিতে ধুয়ে গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, কাগজে-কলমে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা লক্ষাধিক টাকা লুটপাট করেছেন। ফলে সরকারের অভিপ্রায় ব্যাহত হয়েছে এবং কর্মহীন মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নষ্ট হয়েছে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..