আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই সাধারণ ভোটারদের মাঝে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য বিজয়ী প্রার্থীদের নানা দিক আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হচ্ছে। নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া ও আটপাড়া সংসদীয় আসন। বিএনপির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম পর্যায়ে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এ তালিকা প্রয়োজনে পরবর্তীতে প্রার্থী পরিবর্তন হবে বলে কেন্দ্রীয় নির্বাচনী নীতি নির্ধারক আগাম জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে সারাদেশে এ নিয়ে সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ইতিমধ্যে মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থীদের নানা কর্মকান্ডের ফিরিশতি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে। যা নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ড নড়েচড়ে বসছে কোথাও কোথাও। কেন্দুয়া আটপাড়া আসনে বিএনপি মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী।
যিনি ইতিপূর্বে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে দুইবার নির্বাচন করেছেন কিন্তু বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি। ফলে এই দুর্গ থেকে বিএনপির আসনটি হাতছাড়া হয়ে যায়। বর্তমান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। বিএনপির খেটে খাওয়া মানুষের নেতা হিসাবে সকলের নিকট পরিচিত আলহাজ্ব মো দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল। যাঁর বাড়ি পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্র দিঘদাইর গ্রামে। বড় ভাই মরহুম আবু সাদেক ভুইয়া ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকবারের নির্বাচিত অত্যন্ত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান।
১৯৮৮ খ্রি, মৃত্যু পরে হালধরেন আলহাজ্ব মো দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল, যিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব থাকাকালীন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ খ্রি: কেন্দুয়া পৌরসভা মেয়র নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসাবে সকল স্তরের মানুষের সাথে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।একাধিক বার কাউন্সিলের মাধ্যমে কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সহসভাপতি হিসাবে বিগত আওয়ামী শাসন আমলে অপশাসনের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলার কারণে অসংখ্য বার কারাবরন করেন। কিন্তু তা তেও তিনি দমে যাননি। হামলা মামলার নির্যাতনের শিকার হয়ে বছরের পর বছর আদালতের আঙিনায় নেতাকর্মীদের মুক্ত করতে ঘুরতে হয়েছে। শারীরিক মানসিক আর্থিক ভাবে দলের ক্রান্তিলগ্নে নেতাকর্মীদের ধৈর্য সাথে পাশে দাড়িয়ে থেকে হাল ধরেন।
২০০৯ আওয়ামী সরকারের আমলে যেখানে ঘরে টিকে থাকা দায় সেখানে তিনি নিজস্ব তৈরি করা ইমেজ দিয়ে বিএনপি থেকে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। যা তখন বিএনপি নেতাকর্মীকে আরও উচ্ছাসিত করে। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে দলের লোকদের জানমালের নিরাপত্তায় তিনি অক্টোপাসের মত লেগে থেকে কেন্দুয়া আটপাড়া বিএনপিকে হাল ধরেন।
একজন অমায়িক সজ্জন ও দানবীর ব্যক্তি হিসাবে এই আসনে বেশ জনপ্রিয় ও সুখ্যাতি রয়েছে। যিনি কেন্দুয়া আটপাড়া প্রতিটি অঞ্চলে দল ছাড়াও একটা তার নিজস্ব বলয় ও ভোট ব্যংক রয়েছে । যার প্রমাণ মেলে আওয়ামী আমলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া। যা অন্য কোন প্রার্থী পক্ষে সম্ভব হয়নি। স্থানীয় আওয়ামী রাজনীতিকে পরাস্ত করতে হলে দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল এর বিকল্প নেই বলে অভিমত সুশীল সমাজের। তাছাড়া আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য দলের যে ভোট ব্যংক রয়েছে তা আনা একমাত্র সম্ভব দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল এর পক্ষে সম্ভব। যেমনটা তিনি বিগত নির্বাচনে কাজে লাগিয়েছেন।
সাধারণ ভোটারদের ধারণা বর্তমান বিএনপি থেকে যিনি মনোনয়ন প্রাপ্ত হয়েছেন তিনি বিগত আওয়ামী শাসনামলে দল থেকে অনেকটা দূরে।ফলে বিগত সরকারের রাজনৈতিক বিভিন্ন হামলা মামলার নির্যাতনের শিকার দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল। সুত্র জানায়, মনোনয়ন ঘোষণার আগ থেকেই মাঠ তৈরি কাজে ব্যস্ত দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে কেন্দুয়া ও আটপাড়া নির্বাচনী এলাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষের প্রশাসনিক সহ বিভিন্ন কাজ কর্ম পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে এ প্রতিনিধি।
স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যবধি এই আসনে মনোনয়ন প্রাপ্ত প্রার্থী ডক্টর রফিকুল ইসলাম হিলালী দুইবার বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েও সাধারণ মানুষের সাথে সম্পর্ক না থাকায় বিএনপি এই আসনটি হারায়। দলের নীতি নির্ধারক মহল যে মনোনয়ন দিয়েছে তা রদবদল হতে পারে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই আসনটি মনোনয়ন যদি রদবদল না হয় তাহলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হারাতে পারে বলে সাধারণ ভোটারদের অভিমত। এই আসন থেকে স্বাধীনতার পর থেকে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন মরহুম হাদিস উদ্দিন চৌধুরী, মরহুম আলী উসমান খান, মরহুম এম জুবেদ আলী, মরহুম নুরুল আমিন তালুকদার, বেগম খাদিজা আমিন তালুকদার, মঞ্জুর কাদের কোরায়শী,ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, অসীম কুমার উকিল, মরহুম ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার।
দলের হাইকমান্ড যদি মাঠ পর্যায়ে অবস্থান বিবেচনায় পুর্বের কথা অনুযায়ী দলের প্রার্থী পরিবর্তন আনেন তাহলে তা হবে দলের জন্য অত্যন্ত সুখকর নইলে আসনটি নিশ্চিত হাত ছাড়া হবে বলে কর্মী সমর্থকদের ধারণা।