বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
এলডিসি উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে স্পষ্ট হবে সরকার কতটুকু সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারবে : প্রেস সচিব দুমকিতে প্রবাসীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকিয়ার ফাঁদে জড়িয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আড়াইহাজারে সামাজিক নিরাপত্তা ও মাদক প্রতিরোধে করনীয় শীর্ষক আলোচনা ও সাংবাদিক ইউনিয়নের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত নান্দাইলে উৎসবমুখর পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন ॥ সরকারি বাঙলা কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন তাড়াইল প্রশাসনের উদ্যোগে ঝাকজমকভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন মনোহরদীতে পঞ্চাশকুড় দাখিল মাদ্রাসার সুপারকে লাঞ্চিত: থানায় অভিযোগ সাভারে ব্যাক টু ব্যাক ছিনতাই ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে তাড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল

বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস আগামীকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৫৯১১ বার পঠিত

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আগামীকাল ২৮ সেপ্টেম্বর পালিত হবে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস।
এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্কের অবসান, সকলে মিলে সমাধান’।
এবারের প্রতিপাদ্যে- জলাতঙ্ক নির্মূলে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা, সমতার গুরুত্ব এবং সামগ্রিক ব্যবস্থাকে ওয়ান হেলথ এর মাধ্যমে সম্পন্ন করার বিষয়গুলোতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
গত বছর প্রাণির কামড়-আঁচড়ে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে চার লাখেরও বেশি রোগীকে সরকার বিনামূল্যে জলাতঙ্কের টিকা প্রদান করেছে। এতে জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে ২০১০ সালের পূর্বে জলাতঙ্ক রোগে ২০০০ এর অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করতো যা ২০২৩ সালের জুন মাসে কমে মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে মাত্র ২৭।
মরণঘাতী জলাতঙ্ক বহু পুরোনো সংক্রামক রোগ। এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে মৃত্যু অনিবার্য। তবে সময়মত সঠিক ব্যবস্থা তথা টিকা গ্রহণ করলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজী ও শিয়ালের কামড় বা আঁচড় দিলে সাথে সাথে ক্ষারযুক্ত সাবান পানি দিয়ে আক্রান্ত স্থান কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধৌত করতে হবে। এরপর যথাসময়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হিসাবে গ্রহণ করে। স্বাস্থ্য বিভাগ, প্রাণিসম্পদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ২০১১-১২ সাল থেকে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কৌশল পত্র প্রস্তুত করে দেশকে জলাতঙ্ক মুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে এবং তা বাস্তবায়নে রোডম্যাপ তৈরী করা হয়। আর এসব বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছে জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর মাধ্যমে সারাদেশে সকল জেলা সদর হাসপাতাল ও ৩৩৮ টির অধিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমের দেশের সকল উপজেলায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
রাজধানী ঢাকাস্থ মহাখালীতে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও ঢাকাস্থ ৫টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জলাতঙ্কের আধুনিক চিকিৎসা কার্যক্রমও পরিচালিত হচ্ছে। কুকুর বা অন্যান্য প্রাণির কামড়ের ঘটনায় এসব কেন্দ্রসমূহে আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্নভাবে বিনামূল্যে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
জাতীয় গাইডলাইন অনুসারে বর্তমানে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের পূর্ণ ডোজ তিনটি (০, ৩ ও ৭) দিনে নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় রোগীদের অর্থ ও সময়, দুই-ই সাশ্রয় হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সকল সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। যা দক্ষিণ এশিয়ায় জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ল্যাবে প্রাণীদেহে জলাতঙ্কের জীবাণু নিশ্চিতকরণের কাজ করছে। এতে নির্দিষ্ট স্থানে এ রোগের উপস্থিতি ও প্রাদুর্ভাব নির্র্ণয় করে মানুষ ও প্রাণীদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
বর্তমানে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর নির্ভর করে পরিবেশে জলাতঙ্কের প্রধান উৎস কুকুরের মধ্যে ব্যাপকহারে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে। ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান (এমডিভি) কার্যক্রমের মাধ্যমে ইতিমধ্যে দেশের ৬৪টি জেলায় ১ম রাউন্ড, ৩৭টি জেলায় ২য় রাউন্ড এবং ৮টি জেলায় ৩য় রাউন্ড ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের মাধ্যমে কুকুরকে প্রায় ২৭ লক্ষ ৭০ হাজার ডোজ জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা প্রদান করা হয়েছে, যা মানুষ ও প্রাণীদেহে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ^ জলাতঙ্ক দিবস ২০২৩ উপলক্ষে তার বাণীতে বলেছেন ‘জলাতঙ্ক বিষয়ক গ্লোবাল স্ট্রাটেজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক মুক্ত বিশ^ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম সামাজিক জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, ফেস্টুন, স্কুল প্রোগ্রাম, ভিডিও প্রতিবেদন, জনবার্তাসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে নিরলসভাবে কাজ করছে। বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস ২০২৩-কে সামনে রেখে জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা, র‌্যালী ও সেমিনারসহ নানাবিধ কার্যক্রম আয়োজন করা হয়েছে।
জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কারক বিখ্যাত বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর ১৮৯৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তার প্রয়াণ দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০০৭ সাল থেকে এই দিনটিকে বিশ^ জলাতঙ্ক দিবস হিসেবে পালিত হয়।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..