পটুয়াখালীর লেবুখালীতে অবস্থিত শেখ হাসিনা সেনানিবাসের নাম ‘পটুয়াখালী সেনানিবাস‘ করার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় নিজস্ব কার্যালয়ের হলরুমে সংবাদ সম্মেন করে এ দাবী জানান পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আন নাহিয়ান। এসময় তিনি বলেন, গত ১০ মার্চ পতিত স্বৈরাচর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্য ব্যক্তিবর্গের নামে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আওতাধীন ১৬টি সংস্থা, প্রতিষ্ঠান এবং স্থাপনার নাম বাতিল করে নতুন নামকরণ করা হয়। এরমধ্যে পটুয়াখালী জেলার লেবুখালীতে অবস্থিত ক্যন্টনমেন্টের নতুন নামকরণ করা হয় ‘বরিশাল সেনানিবাস’। পটুয়াখালী জেলার মধ্যে অবস্থিত এ ক্যান্টনমেন্টের নাম ‘পটুয়াখালী সেনানিবাস’ না করে ‘বরিশাল সেনানিবাস’ করায় পটুয়াখালীবাসীকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালীর লেবুখালীতে ১৫৩২ একর জমির ওপর দেশের ৩১ তম এই সেনানিবাস উদ্বোধন করা হয়। উক্ত জমির দাগ, খতিয়ান, মৌজা সব কাগজপত্রে লেবুখালী, পটুয়াখালী লেখা। তবে আংশিক কিছু অংশ বরিশাল জেলার মধ্যে পরেছে। ভৌগোলিকভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ যেহেতু পটুয়াখালী জেলাধীন, এমনকি প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপনেও পটুয়াখালীর লেবুখালী ইউনিয়নের নাম মেনশন করা হয়েছে। সেহেতু পটুয়াখালী জেলার মধ্যে অবস্থিত এ ক্যান্টনমেন্টের নাম ‘পটুয়াখালী সেনানিবাস’ করার জন্য সরকারের কাছে পটুয়াখালীবাসীর পক্ষথেকে জোর দাবী জানাচ্ছি।
আব্দুল্লাহ আন নাহিয়ান বলেন, আজকের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে আমরা পরিষ্কার ভাষায় দের্থহীন কন্ঠে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে চাই পটুয়াখালীর সচেতন নাগরিক, সিভিল সোসাইটি, সিনিয়র সিটিজেনস ও সর্বস্তরের পটুয়াখালীবাসী আপনাদের এই সিদ্ধান্তে বিরক্ত বিব্রত ও সংক্ষুব্ধ অনুভব করছে। আপনাদের এই পক্ষপাতমূলক নাম পরিবর্তনের এই সিদ্ধান্ত যেখানে একাডেমীকালি ও জিওগ্রাফিকালি তথ্যবিভ্রাট রয়েছে। এমন বিভ্রান্তকর সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে রিভিউ করবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
এ দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন থেকে পটুয়াখালীবাসীর পক্ষ থেকে তিনিটি কর্মসূচী ঘোষণা করেন পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন। কর্মসূচীগুলো হলো, ১৩ই মার্চ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেস্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। ১৪ই মার্চ সেনানিবাস সংলগ্ন দুমকিতে অবস্থিত পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি। ১৫ ই মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পটুয়াখালীর সিনিয়র সিটিজেন নাগরিকদের পদচারণার মাধ্যমে জোরালো তদবির। দাবী আদায় না হলে ২৬ শে মার্চ বিকেল ৩টায় পটুয়াখালী শিল্পকলা একাডেমিতে নাগরিক সমাবেশ থেকে কঠোর কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক গণদাবী সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, পটুয়াখালী জেলা নারী নির্যাতন ও দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) এডভোকেট রুহুল আমিন, পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাশার, নির্বাহী সদস্য এডভোকেট সাইদুর খান পাবেল, এডভোকেট আবু সাইদ খান সামিম প্রমুখ।