কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযানে গত ৩ মাসে বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ১৯,৬৬,০৫০/- টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উভয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পৃথক পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এই জরিমানার অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করেন।
এসব ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ সংশোধিত ২০২৩, সড়ক ও পরিবহন আইন ২০১৮, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫, পণ্য পাটজাত দ্রব্য মোড়কের বাধ্যতামূলক আইন ২০১০, স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯, ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ এর বিভিন্ন ধারায় এসব অর্থ দন্ড প্রদান করা হয়েছে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোট রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়, বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমান যোগদানের পর থেকে গত ২০/১১/২০২৪ইং থেকে ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট আইনের বিভিন্ন ধারায় ৪০টি মামলায় ২,৯৯,৯০০/-টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন জানান, তিনি যোগদানের পর ০৫/১০/২০২৪ ইং থেকে ৩১/১২/২০২৪ ইং পর্যন্ত ৪৮ টি মামলায় ৫৩ জনের নিকট থেকে সর্বমোট ১৬,৬৬,১৫০/-টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। দিনে এবং রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযানকালে ১১০ টি ড্রেজার বিনষ্ট বা অপসারণ করা হয়েছে। ৯৫ হাজার পাইপ ভেঙে বিনষ্ট করা হয়। এছাড়াও জমির উর্বর মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত এক্সকেভেটর (ভেকু) এবং মাটি পরিবহনের ৬০টি ট্রাক্টর মুচলেকা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এক্সকেভেটরে ব্যবহৃত ১০টি ব্যাটারি জব্দ করা হয়। মুরাদনগর উপজেলা জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি এম কে আই জাবেদ বলেন, বর্তমান ইউএনও ও এসি ল্যান্ড যোগদানের পর থেকে বিশেষ করে কৃষিজমি রক্ষায় দিনে ও রাতে ড্রেজার ও ভেকুর বিরুদ্ধে সাড়সি অভিযান পরিচালনা করছেন। কিন্তু অপসারণের কিছু দিনের মধ্যেই পুনরায় প্রভাবশালী ড্রেজার ব্যবসায়ীরা নতুন ভাবে মাটি উত্তোলনের কাজ শুরু করে দেন। কিছুটা কমলেও একেবারে দমন করা সম্ভব হচ্ছে না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এড: এ কে আজাদ উজ্জল জানান, অনেকেই ড্রেজারে ক্ষতিগ্রস্থ জমি ভরাট করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে জমির দাগ মৌজা উল্লেখ করে ইউএনও এবং এসি ল্যান্ডের নিকট আবেদন করেছেন। প্রশাসন মহামান্য আদালতের প্রদানকৃত নির্দেশনা মতে মাটি দিয়ে ভরাটের ব্যবস্থা নিতে আইনত বাধ্য হলেও এখন পর্যন্ত ড্রেজারের অবৈধ গর্ত ভরাট করে কৃষিজমি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিতে মহামান্য হাইকোর্টের রিট ১৪১০৮/২২ মোকদ্দমার নির্দেশনা মতে তেমন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, কৃষি জমির টপসওয়েল রক্ষায় এই ধরনের অভিযান আগামীতে আরো জোরদার ও অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।