বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) সদ্য প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের বেশ কিছু সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে। এ প্রেক্ষিতে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে বাগেরহাট-৪ আসনটি, যা দীর্ঘদিন ধরে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলাকে নিয়ে গঠিত ছিল। নির্বাচন কমিশনের ৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০২১ সালের জাতীয় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ আইনের ৯ ও ১১ ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটার সংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যার ঘনত্ব ও প্রশাসনিক কার্যকারিতা বিবেচনায় আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ফলে বাগেরহাট জেলায় বর্তমানে আর মাত্র তিনটি আসন (বাগেরহাট-১, ২ ও ৩) বহাল থাকছে। বিলুপ্ত বাগেরহাট-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলার ভোটারদের এখন অন্য আসনের অধীনে নির্বাচন করতে হবে।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে মোরেলগঞ্জে দেখা দিয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এই আসন বিলুপ্তির সিদ্ধান্তে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন, মোরেলগঞ্জ একটি বৃহৎ উপজেলা এবং এটি নিজস্ব একটি সংসদীয় আসন পাওয়ার মতো জনসংখ্যা ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে। দীর্ঘদিন ধরে আলাদা একটি আসন থাকার পর হঠাৎ এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনগণের জন্য হতাশাজনক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। মোরেলগঞ্জের বিভিন্ন পেশাজীবী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, প্রশাসনিক সুবিধা ও জনগণের কণ্ঠস্বর জাতীয় সংসদে উপস্থাপন নিশ্চিত করতে মোরেলগঞ্জের জন্য একটি আসন থাকা আবশ্যক।
প্রসঙ্গত, নতুন সীমানা পুনর্বিন্যাসে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত ৩৫টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লিখিত আপত্তি জানানোর শেষ সময় ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (১০ আগস্ট ২০২৫ খ্রি.) পর্যন্ত।
নতুন এই সিদ্ধান্তে আসন পুনর্বিন্যাস বাস্তবায়ন হলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মোরেলগঞ্জের জনগণকে নতুন আসনের আওতায় ভোট দিতে হবে। এতে প্রশাসনিক জটিলতা ও প্রতিনিধিত্ব সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।