মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভরা মৌসুম চলছে। তবে চলতি মৌসুমে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে লোকসানের মুখে পরেছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
কৃষকরা বলছেন, চলতি বছরে বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ চাষে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। রোপন করার জন্য গুটি পেঁয়াজই কিনতে হয়েছে ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা মন। এখন সেই উৎপাদিত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা মন দরে৷ এছাড়াও ঘন কুয়াশা অনাবৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফলনও তুলনামূলক কম হয়েছে।
সরেজমিনে ০৮ ফেব্রুয়ারী (শনিবার) হরিরামপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের হাট ঝিটকা বাজারে ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে কৃষকদের মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১১৬০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা মন দরে। যা কিনা এক সপ্তাহ আগেও ১৬০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা মন দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের আমদানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দামেও ব্যপক দরপতন হয়েছে।
বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে আসা বিজয়নগর গ্রামের কৃষক সুবির মন্ডল বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পেঁয়াজের দাম বেশ কম। তিনি এবছর ৩ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। ফলন মোটামুটি ভালো হলেও দাম এখন কম। বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা। বর্তমান দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে কোনরকমে তার উৎপাদন খরচ কিছুটা উঠবে। তবে লাভবান হতে পারবেন না।
আরেক কৃষক সুবোধ সরকার জানান, তিনি এবছর আড়াই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে লোকসানের মুখে পরেছেন। গুটি পেঁয়াজ ক্রয়, শ্রমিকের মজুরি, সার-কীটনাশ সব মিলিয়ে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি প্রায় লাখ টাকার মতো। বর্তমান ১২০০ টাকা মন দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভ তো হচ্ছেই না বরং উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে।
ঝিটকা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জবেদ আলী জানান, গত কয়েকদিনে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ব্যপক দরপতন হয়েছে। কদিন আগেও যে পেঁয়াজ ১৭০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা মন দরে ক্রয় করছেন সপ্তাহের ব্যবধানেই এখন তা ১২০০/১৩০০ টাকা মনে নেমে গেছে। বাজারে পেঁয়াজের আমদানি বৃদ্ধির কারণে দাম কমে গেছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, গতবছর পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় চাষিরা পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। যার কারণে এবার হরিরামপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে পেয়াজ সরবারাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে রমজান মাস আসলে দাম কিছুটা বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।