মোঃ নাজমুল, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছোলমবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ইতালি প্রবাসী মোঃ রুবেল শেখের বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতি চালিয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাত প্রায় ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন প্রবাসীর মা মহিমা বেগম (৫৫) এবং তার বোনের মেয়ে, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাবাচ্ছুম আক্তার (১৩)। তারা জানান, গভীর রাতে পিছনের দরজায় সন্দেহজনক শব্দ পেয়ে মহিমা বেগমের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখতে পান, ১০-১২ জনের মুখোশধারী ডাকাত দল ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেছে। তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে বাড়ির সদস্যদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে ফেলে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চুপ থাকতে বলে।
ডাকাত দলটি পিছনের জানালার গ্রিল ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। ভুক্তভোগীরা জানান, ডাকাতদের মুখ কাপড়ে ঢাকা থাকলেও তারা সবাই অপেক্ষাকৃত অল্পবয়সী ছিল। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা এই লুটপাটের সময় ডাকাতরা বাড়ির বিভিন্ন জায়গা তছনছ করে নগদ ৬ লাখ টাকা, ১৭ ভরি স্বর্ণালংকার, দুটি বিদেশি কম্বল এবং দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন লুট করে নেয়।
এ সময় ডাকাতরা ভুক্তভোগীদের শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে মূল্যবান সম্পদ বের করে দিতে বাধ্য করে। ভুক্তভোগী পরিবার সন্দেহ করছে, ডাকাতরা হয়তো আগেই জানত যে এই বাড়িতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে, কারণ তারা প্রথমেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার কথা জানতে চায়।
সকালে বিষয়টি থানায় জানানো হলে, মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রাকিবুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, “বাড়িটি একান্তই নির্জন স্থানে হওয়ায় এবং বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় ডাকাতেরা সহজেই তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। আলামত হিসেবে একটি বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা দ্রুত ডাকাতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাটির গুরুত্ব বিবেচনায় তদন্ত কার্যক্রম জোরদার করেছে বলে জানিয়েছে।