মাগুরায় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হয় শিশু আছিয়া।তার হত্যার বিচার দ্রুত করার দাবি জানিয়েছে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদল। শুক্রবার (১৪ মার্চ) জুমার নামাজের পর সরকারি বাঙলা কলেজ মাঠে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা করা হয়। জানাজা শেষে ছাত্রদল নেতারা এ দাবি জানান।
মাগুরা জেলার ৮ বছর বয়সী আছিয়া ৬ মার্চ তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন, ৭ মার্চ, তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে, তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে, তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে শুক্রবার রাতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় এবং শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। এরপর, রোববার তাকে সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায়, বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় সিএমএইচে তার মৃত্যু হয়।
সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “শিশু আছিয়ার নির্মম হত্যাকাণ্ড আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় ছাত্রদল দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখতে চাই, আছিয়ার পরিবার দ্রুত বিচার পায়। বাংলাদেশে কোনো শিশু যেন এমন নির্মমতার শিকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আছিয়া হত্যার দ্রুত বিচার এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির জোর দাবি জানাই।”
“দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির নিশ্চয়তা না দেওয়া হলে ছাত্রদল সারাদেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা আছিয়া হত্যার বিচারের দাবিতে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
গায়েবানা জানাজায় অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এই ঘটনার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান। তারা বলেন, “শিশু আছিয়া কোনোভাবেই এই নির্মমতার শিকার হওয়ার যোগ্য ছিল না। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, নইলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।”
গায়েবানা জানাজা শেষে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা শপথ নেন যে, তারা আছিয়া হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন। নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা শোক প্রকাশের পাশাপাশি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, যেন দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।