বরগুনার আমতলী উপজেলার কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় ক্লার্ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষের ছেলে ও দাতা সদস্যের ছেলের স্ত্রীকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে সাজানো পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে ওই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) না জানিয়ে অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নিজাম উদ্দিন আকন পুলিশ মোতায়েন করে লাল নিশান টানিয়ে পরীক্ষা নেন, যা নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর কুতুবপুর ফাজিল মাদ্রাসায় ক্লার্ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই পদে ১১ জন আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ৯ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যক্ষের ছেলে রেদওয়ানুল ইসলাম আবির আকন এবং দাতা সদস্য আব্বাস মৃধার ছেলের স্ত্রী আল্পনা আক্তার।
পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই অধ্যক্ষের ছেলে আবির, দাতা সদস্যের ছেলের স্ত্রী আল্পনা ও আরও একজনের ভাইভা পরীক্ষা নেওয়া হয়। বাকি পরীক্ষার্থীদের দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে জানানো হয়— পরীক্ষা শেষ।
পরীক্ষার্থী নাঈম ও সাবিনা আক্তার বলেন, সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার কী দরকার ছিল? নিয়োগ কমিটির লোকজন আগেই মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল না দিয়েই আমাদের বের করে দেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষা চলাকালে দাতা সদস্য মো. আব্বাস মৃধা নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অফিস কক্ষে বসা ছিলাম, কেউ নিষেধ করেনি। আমার ছেলের বউও লিখিত ও ভাইভা দিয়েছে।
অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন আকন বলেন, পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম হয়নি। এরপর তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি।
মাদ্রাসার সভাপতি ও গুলিশাখালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী সভাপতি মো. জিয়াদুল করিম বলেন, অভিযোগ থাকতেই পারে, তবে নিয়োগে অনিয়ম হয়নি। তবে অনিয়ম সংক্রান্ত প্রশ্নে পরে ফোন ও বার্তায়ও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধি মাদ্রাসা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, অধ্যক্ষের অনুরোধে পুলিশ দিয়েছি। তবে লাল নিশান কেন টানানো হয়েছে, জানি না।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। ১৪৪ ধারা জারি ছাড়া লাল নিশান টানানো যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।