শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কেরানীগঞ্জে পলের গণসংযোগে বাধার অভিযোগ নান্দাইলে রাজগাতী, গাংগাইল ও মুশুলী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটির অনুমোদন শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন ১৮ বছর ধরে প্রভাবশালীদের দখলে সরকারি রাস্তা — ফেরত চেয়ে মোরেলগঞ্জে ভুক্তভোগীদের মানববন্ধন মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা, কাঁদছে প্রিয় শিক্ষক সমাজ ও প্রিয় স্বদেশ ! মির্জাগঞ্জ সমাজকল্যাণ ফাউন্ডেশনের গুণীজন মিলনমেলা ও সম্মাননা অনুষ্ঠিত তাড়াইলে “মানব সেবায় আমরা” এর পক্ষ থেকে ইউএনও, ওসিকে সংবর্ধনা মান্যবর প্রধান উপদেষ্টা, আপনি শিক্ষক সম্প্রদায়ের বাতিঘর ! স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও ফসল রক্ষায় আমতলীতে ইটভাটি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন এইচএসসিতে এক বিষয়ে ফেল, শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

কথা না শুনলে জেলে নইলে গুলি! অধরাই রয়ে গেল সেই বেপরোয়া ওসি শাহিন ফকির

বিশেষ প্রতিবেদক:
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ২১৪৮১ বার পঠিত

বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকিরের বিরুদ্ধে সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা এবং বিরোধিদলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানী, হুমকী-দামকীসহ নানা অভিযোগে তৎকালীণ নির্বাচন কমিশনে একাধিক অভিযোগ দেয়ার পরে প্রত্যাহার হওয়া সাবেক ওসি শাহিন ফকির অধরাই রয়ে গেল।

ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন, ছিলেন সাবেক ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের পোষ্য ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তা। চাকরি জীবনে প্রাইজ পোস্টিং হিসেবে ঢাকার দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর বদৌলতে ফ্যাসিস্টদের ১৬ বছরে অধিকাংশ সময় চাকরি করেছেন দুই মন্ত্রীর নির্ধারিত আসনের সংশ্লিষ্ঠ থানায়, প্রথমে কামরাঙ্গিরচর থানায় সাবেক খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলামের ধর্মপুত্র হিসেবে থানার ওসি হয়ে আসেন। কামরাঙ্গিরচর থানায় যোগদান করে কামরুল ইসলামকে খুশি করার জন্য বিএনপির দলীয় কর্মীদের গ্রেফতার, মামলা-হামলা দিয়ে মন্ত্রীর মন জয় করেন। এরপর শুরু করেন মন্ত্রীকে খুশি করার জন্য চাঁদাবাজি, দখলবানিজ্য ও অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন। মন্ত্রী কামরুল প্রেমী শাহিন ফকিরের দমন-পীড়ন দেখে নেক নজরে পরে আরেক প্রতি মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর।

এবার ওসি শাহিন ফকিরের মাথার উপরে দুই মন্ত্রীর ছায়া পড়ায় আরো ব্যাপোরোয়া হয়ে উঠেন বিএনপিকে দমন-নিপিড়নের। কেরানীগঞ্জ এরিয়াতে আতংকিত হয়ে উঠেন ওসি শাহিন ফকির।

তার এহেন কর্মকান্ডের কারনে ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর চিঠি দেন ঢাকা-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমানের ছেলে।

অমির দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘ঢাকা মহানগরীর ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের সমন্বয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার করছেন, যা সিডির মাধ্যমে প্রতীয়মান। তিনি গত তিন বছর কামরাঙ্গীরচর থানায় অবস্থান করছেন বিধায় শাহীন ফকিরের প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করছি।

উক্ত চিঠি তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), এডিশনাল আইজিপি (প্রশাসন), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি বরাবরও অনুলিপি দেয়া হয়।

তাছাড়া তিনি কামরাঙ্গীরচর থানায় কর্মরত অবস্থায় সাবেক ফ্যাসিস্ট মন্ত্রী কামরুল ইসলামের নির্দেশে কামরাঙ্গীরচরের মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে কোন এক নেতাকে দাওয়াত দেয়াতে কয়েক দফা এসে ইফতার পার্টি বন্ধ করে দেন।

তিনি সবসময় বলে বেড়াতেন ও অন্যান্যদের হুমকী দিতেন এই বলে যে, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ছাড়া কামরাঙ্গীরচরে কোনো নেতার পোস্টার থাকবে না, তার বাইরে কোনো রাজনীতি থাকবে না। কামরুল ইসলামই নৌকার একমাত্র মাঝি, আমার কথার বাইরে যারা কাজ করবে তাদের খবর আছে। আমি সাবধান কইরা দিতেছি। কামরুল বিরোধীদের থানায় ডেকে নিয়ে হুমকি ও মাদক উদ্ধারের নামে তাদর বাড়িতে গিয়ে তল্লাশির নামে চালানো হতো নির্যাতন।

ওসি শাহিন ফকির দুই মন্ত্রীকে কাজে লাগিয়ে কেরানীগঞ্জ ও কামরাঙ্গিরচর থেকে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করে নামে-বেনামে করেছেন সম্পদের পাহাড়! ওসি শাহিন ফকিরের অত্যাচর, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কেরানীগঞ্জ ও কামরাঙ্গিরচরবাসী তার অত্যাচার তুলে ধরে স্বররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একাধিক অভিযোগ দায়ের করলে কর্তৃপক্ষ তাকে কামরাঙ্গিরচর থানা থেকে বংশাল থানায় বদলি করেন।

বংশাল থানায় যোগদান করার পর বিভিন্ন বিএনপির ব্যবসায়িদের কাছ থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ও নিরপরাধ মানুষদের থানায় নিয়ে আটকে রেখে অবৈধ পথে টাকা আদায় করার অভিযোগে তাকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়। চাকরি জীবনে তিনি যেখানেই চাকরি করেছেন সেখানেই তিনি আওয়ামী বিরোধীদের মিথ্যা, হয়রানীমূলক মামলা ও অর্থ আদায়ে নিয়মিত ব্যস্ত হয়ে ছিলেন।

বংশাল থানায় থাকা অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. তাজউদ্দিন আহমেদকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হলে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রাজধানীর টিকাটুলী মোড় থেকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও বংশাল থানা বিএনপির সভাপতি তাজউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করা হলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ করেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেন। এরপর আবারো ওসি শাহীন ফকিরকে শোকজ করে দুই কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।

পরে আবারো ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. আবদুস সালাম মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পরই গ্রেপ্তার করা হলে আবারো রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অভিযোগ দিলে ওসি শাহিন ফকিরকে পুনরায় শোকজ করা হয়।

৫ই আগস্ট ২০২৪ এ গণঅভ্যুত্থানের পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে তিনি ৭ এপিবিএন সিলেটে বদলী হয়ে সকল অবৈধ কর্যকলাপকে ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বর্তমানে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক শাহিন ফকিরের বক্তব্যর জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি, ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।

সাবেক ওসি শাহিন ফকিরের বিষয়ে ৭ এপিবিএন সিলেটের সিইও (অতিরিক্ত ডিআইজি) বলেন তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা পূর্বের হয়তোবা, আমাদের এপিবিএনে থাকা অবস্থায় না, তারপরেও প্রপার চ্যানেলে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবো। (পর্ব-২ আসছে)।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..