আছে গরু নাবায় হাল তার দুঃখ সর্বকাল এই প্রবাদটি যেন সত্যই পরিণত হয়েছে রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের উপহারের ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটির ক্ষেত্রে। ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আধুনিক ও কার্যকর প্রযুক্তির সেবায় ব্যবহৃত একটি বিশেষায়িত বাহন।
এটি টিকাদান কার্যক্রমে গতি আনতে দুই বছর আগে রংপুরে আনা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে মূল্যবান এই বাহনটি। মাঠপর্যায়ে এ অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবহার না হওয়ায় মিলছে না কাঙ্খিত সুফল। কবে নাগাদ উপহারের এই বাহনটির চাকা ঘুরবে তার সদুত্তর নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের কাছে।
কর্তৃপক্ষ বলেন, শিগগিরই মাঠপর্যায়ে পড়ে থাকা ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করা হবে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সুত্রে জানা যায, সংস্কার ও টিকার ডিপো না থাকায় রংপুরের অ্যাম্বুলেন্সটি কাজে আসছে না। জানা যায়, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইপিআই কর্মসূচির অধীনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইএফআরসি) অর্থায়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয়ে একটি ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করে। একই সময়ে দেশের অন্যান্য বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়েও একই ধারণের ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অত্যাধুনিক ও বিশেষায়িত এ ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটি টিকা নিরাপদভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে দেয়ার কাজে ব্যবহার করার জন্য আনা হয়েছে। এটিতে ফ্রিজিং ইউনিট থাকায় ২ ডিগ্রি থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকা সংরক্ষণ করা যায়।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ডিজিটাল থার্মোমিটার বা সেন্সর। অতিরিক্ত সুরক্ষায় থাকে কোল্ডবক্স ও আইসপ্যাক। দুর্গম ও দূরবর্তী এলাকায় কোল্ড চেইন বজায় রেখে টিকা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সটি খুবই কার্যকর। ভ্রম্যমান টিকাদান কেন্দ্র হিসেবেও এটি ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কেন বছরের পর বছর ধরে এই অ্যাম্বুলেন্সটি পড়ে আছে, তার জবাবে ইপিআই প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, পর্যাপ্ত তহবিল না থাকায় সংস্থাপন ব্যয় ও অন্যান্য খরচ বহন করা সম্ভব হয়নি।
আগামী সেপ্টেম্বরে ডিপিপি অনুমোদন পেলে অ্যাম্বুলেন্সগুলো চালু করা যাবে। ইপিআই’র লাইন পরিচালক ডা. এ এফ এম শাহাবুদ্দিন খান বলেন, এগুলো ডোনেশন থেকে পাওয়া। আমরা অপারেশনাল প্ল্যান তৈরি করতে পারিনি। খরচের টাকা দিতে না পারায় আধুনিক এই বাহনটিকে চালু করা যাচ্ছে না।
রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. মো. ওয়াজেদ আলী বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি এখন বোঝা হয়ে আছে। আমরা চিঠি দিয়েছি এবং ইপিআই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। গাড়ি চালানোর জন্য চালক ও অন্য ব্যয় বরাদ্দ না থাকায় এটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।