বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

সৌদিআরবে অগ্নিকান্ডে নিহত প্রবাসী আকাশের লাশ ছয় মাসেও আনতে পারেনি পরিবার

মোঃ রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৭৫১ বার পঠিত
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের জিয়াদ এলাকায় একটি পেট্রোল পাম্পে কাজ পায় আকাশ। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই পেট্রোল পাম্পে অগ্নিকান্ডে প্রাণ হারায় আকাশ। নুর মোহাম্মদ আকাশ সরকার এর বয়স ২২বছর, অভাবের সংসারে মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিদেশে পাড়ি জমায় আকাশ। যে অল্প বয়সে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছিলো সেই মাকে দুঃখের অথৈসাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেয় আকাশ। দুর্ঘটনায় ছেলের মৃত্যুর ৬মাস পেরোলেও এখনো লাশটি দেশে আনতে পারেনি তার পরিবার।

নিহত নুর মোহাম্মদ আকাশ সরকার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন আন্দিকুট ইউনিয়নের সোনারামপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও সাহিদা বেগম দম্পতির ছেলে। তার লাশটি সৌদি আরবের জিয়াদ এলাকায় একটি হাসপাতালে আছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবার। মৃত্যুর ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কলিজার ধন পুত্রের লাশটি দেশে আনতে পারেনি তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুখিনী মা সাহিদা বেগম ছেলের ছবি ও কাপড়-চোপড় হাতে নিয়ে বিলাপ করেছেন, এই আহাজারি যেন থামবার নয়, তার আহাজারি কান্না এবং বিলাপের কারণে সোনারামপুরের পরিবেশ ভারী হয়ে গেছে। তাকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও খুজে পাচ্ছে না প্রতিবেশিরা।

সাহিদা বেগম বলেন, আমার আকাশ আমার কষ্ট দূর করতে বিদেশ গেছে। আমার কলিজা আমারে রাইখা চইলা গেছে। আপনারা আমার কলিজার লাশটা আইনা দেন, আমি তারে বুকে জড়াইয়া ধইরা মাটি আমার বুকটা শান্তি করমু।

আকাশের বাবা রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন নয় মাস আগে৷ আমার ছেলেটা বিদেশ গেছে, ছয়মাস আগে সে মারা যায়। এতোদিনেও লাশটা আনতে পারি নাই। সরকারের কাছে দাবী করছি আমার আকাশের লাশটা দেশে আনার ব্যবস্থা করেন।

আন্দিকুট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নোয়াব আলী সরকার বলেন, ছয় মাস আগে সৌদিআরবে পেট্রোল পাম্পে আগুন লেগে আকাশ মারা যায়। এখনো তারা লাশটি দেশে আনতে পারে নাই৷ লাশ আনার মতো সামথ্য তাদের নাই। তাই সরকারি খরচে তার মরদেহটি দেশে আনার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করছি।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমাকে আগে জানানো হয়নি। আজকে জানলাম, পরিবারের সদস্যরা লিখিত আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুমিল্লা প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার সহকারী পরিচালক আলী হোসেন বলেন, সরকারি খরচে মরদেহ আনা হবে, দাফনের জন্য লাশের সাথে ৩৫হাজার টাকা দেয়া হবে। পরবর্তীতে আরোও ৩লাখ টাকা পাবে। পরিবারের সদস্যদের আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..