বরগুনায় দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা অবকাঠামোর অভাব এবং বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতির প্রতিবাদে ‘ চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল’ স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে বরগুনা উন্নয়ন ফোরাম, বরগুনা প্রেসক্লাবসহ কয়েকটি সামাজিক ও সাংবাদিক সংগঠন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উপকূলীয় জেলা বরগুনা একদিকে যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে, অন্যদিকে তেমনি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা অবহেলিত। জেলার প্রায় ১৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা চাহিদা পূরণে একটি ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল থাকলেও সেখানে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিংবা ওষুধ। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বক্তারা আরও বলেন, জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থাকলেও সেখানকার হাজারো মৎস্যজীবীর জন্য নেই কোনো নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা ব্যবস্থা। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে পাশের দেশ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, যা অর্থনৈতিকভাবে কষ্টসাধ্য ও মানসিকভাবে দুর্বিষহ। এমন প্রেক্ষাপটে বরগুনায় একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
মানববন্ধনে বক্তারা উল্লেখ করেন, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীন সরকার দেশের স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই প্রেক্ষিতে বরগুনার মতো দুর্গম ও পিছিয়ে পড়া উপকূলীয় জেলায় একটি ‘চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল’ স্থাপন করা হলে তা হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে শুধুমাত্র বরগুনা নয়, পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষও উপকৃত হবেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রেজবুল কবির, প্রেসক্লাব সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল হাফিজ, সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন মিরাজ, জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শারমিন সুলতানা আসমা, বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
মানববন্ধন শেষে বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, যেখানে বরগুনায় একটি আধুনিক হাসপাতাল স্থাপনের দাবি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়।