শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আমতলী থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট! এমন আলোচিত ঘটনা জানেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসুস্থ সাবেক মেয়রের পাশে মানবিক নেতা: হাসপাতালে সাক্ষাৎ করলেন আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান তাড়াইলে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে ‘বিসিক উদ্যোক্তা মেলা-২০২৫’ নলছিটিতে ইয়ুথ আউটরিচ কমিউনিকেইটার টিম গঠনের লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণজাগরণ দল পটুয়াখালী সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন ছাগলে কলমি শাক খাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা — একই পরিবারের চারজন আহত, বরগুনা-১ আসনের মনোনয়নে ক্ষুব্দ আমতলী-তালতলী প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এমরান চৌধুরী মোরেলগঞ্জে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

আগস্টের ১ম সপ্তাহে গাইবান্ধার তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন

রংপুর ব্যুরো:
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫
  • ৫৭৯৯ বার পঠিত

কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা সীমান্তে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরে তিস্তা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু। নদীর নামের সঙ্গে মিলয়েই সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে। এখন শুধু অপেক্ষা সেতুটি উদ্বোধনের। আগামী ২ আগস্ট সেতুটি উদ্বোধন হতে পারে বলে একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে।

সেতুটি দিয়ে যান চলাচল শুরু হলে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের যাতায়াত আরও সহজ হবে। এলাকার উৎপাদিত পণ্য সারা দেশে পৌঁছে যাবে অল্প সময়ের মধ্যই। তখনই চরাঞ্চলসহ এলাকার মানুষের ভাগ্যের চাকা খুলে যাবে। আসবে আর্থিক পরিবর্তন। এমন আশা করছেন এই জনপদের মানুষ। সংিিশ্লষ্টরা বলেন, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।এদিকে যান চলাচল শুরুর আগেই সেতুটি ঘিরে সেখানে তৈরি হয়েছে একধরনের বিনোদনকেন্দ্র।

প্রতিদিন শত শত মানুষ ছুটে আসছে সেতুটিতে দেখতে। সেতুটি নির্মিত হয়েছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুরঘাট এলাকায়। গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ২৮ কিলোমিটার। সেতুটির অপর প্রান্তে কুড়িগ্রামের চিলমারী ঘাট। গাইবান্ধা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিস্তা নদীর ওপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা।

২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজের দায়িত্ব পায় চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিমিটেড। সরেজমিনে দেখা যায়, নানা বয়সী মানুষ সেতুটি দেখতে এসেছে। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেতুর ওপর হাঁটছিলেন, ছবি তুলছিলেন। শিশুদের জন্য নাগরদোলা বসানো হয়েছে, আশপাশে গড়ে উঠেছে খেলনা ও খাবারের অস্থায়ী দোকান। কেউ নদীর জলে পা ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন, কেউ দল বেঁধে গোসল করছিলেন, আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ করছেন।

স্থানীয়রা বলেন, সেতুটি উদ্বোধন হলেই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। তখন গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলসহ উত্তরাঞ্চলের কৃষিপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, শিল্পজাত পণ্য সহজে ও স্বল্প ব্যয়ে স্থানান্তর করা যাবে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায়। পাশাপাশি শিল্প ও ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্যবসায়ী আইনুল হক বলেন, সেতুটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে সুবিধা হবে। এক মুল্লুক আর ঘোরা লাগবে না। চরের জিনিসপাতির দাম কৃষকেরা সঠিক পাবে। কৃষক তারা মিয়া বলেন, যোগাযোগ ভালো না থাকার কারণে চরের কাঁচামালগুলোর হামরা দাম পাই নাই। এখন দূর থেকে পাইকাররা আসবে।

আশা করি জিনিসপাতির দাম থেকে আর বঞ্চিত হবো না। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের চন্ডিপুর ইউনিয়নের সীচা বাজারের রেজাউল করিম বলেন, সেতুটি দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফল। সেতুটি চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার খুলে যাবে। সেতুটি চালু হলে অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলেই এলাকার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।

রাইসুল কামাল বলেন, আমি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেরার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। বর্ষাকালে নদীতে স্রোত বেশি থাকলে নৌকা চালাতে ভয় লাগে, ফলে রংপুর হয়ে যেতে হয়। এতে সময় ও খরচ দুই-ই বাড়ে। সেতু চালু হলে সেই কষ্ট থাকবে না, ঝুঁকিও কমবে। সেতু ও সংযোগ সড়ক চালু হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৩৫ কিলোমিটার কমে আসবে।

কেবল কুড়িগ্রাম নয়, উত্তরাঞ্চলের আরও কয়েকটি জেলার ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। গাইবান্ধার মতো তুলনামূলক পশ্চাৎপদ একটি জেলার আর্থসামাজিক উন্নয়নও ঘটবে। গাইবান্ধা জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মাকসুদার রহমান বলেন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক থেকে গাইবান্ধা শহর ২১ কিলোমিটার দূরে। এ কারণে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার হয়নি।

তিস্তা সেতু ও সংযোগ সড়ক চালু হলে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ গাইবান্ধা শহরের ভেতর দিয়ে ঢাকায় যাতায়াতের সুযোগ পাবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব খাতে উন্নয়ন হবে। গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, দেশে এলজিইডির সবচেয়ে বড় প্রকল্প তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু। সেতুটি উন্মুক্ত হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব কমবে ১৩৫ কিলোমিটার। এতে সময় সাশ্রয় হবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। মূল সেতুর কাজ শেষ। কিছু সংযোগ সড়ক ও বিদ্যুৎ সংযোগের সামান্য কাজ বাকি আছে।

সেতু চালুর পর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে, নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে, চরাঞ্চলের কৃষকেরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পাবে। এছাড়া দুই জেলার মানুষের নতুন নতুন কর্মসংস্থান বাড়বে। এতে করে এলাকার মানুষের জীবনমান আরও উন্নত হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..