মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
মির্জাগঞ্জ মাজারের হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ফের উত্তাল জনমত আইন শৃঙ্খলার ব্যর্থতার কারণে সোহাগের হত্যা হয়েছে- নাহিদ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে নান্দাইলে বিক্ষোভ মিছিল  সিলেটে কমিটি ঘোষণার ১ দিন পর এনসিপির ৩ নেতার পদত্যাগ দিনাজপুরে কিশোরকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন মঞ্চ প্রস্তুত, কিন্তু এনসিপির নেতারা মঞ্চে না উঠে পাশ দিয়ে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ! মব দমন না করে নির্বাচন করলে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না: জিএম কাদের আমতলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু মৃধার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন পানি আনতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় ৬ শিশুসহ নিহত ১০ নেপালকে হারাল বাংলাদেশের মেয়েরা

মির্জাগঞ্জ মাজারের হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ফের উত্তাল জনমত

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫
  • ৫৭৫২ বার পঠিত

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক হযরত ইয়ার উদ্দিন খলিফা (রহ.) মাজারকে ঘিরে ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন মাজারের হিসাবরক্ষক মোঃ সোহাগ মল্লিক। এক ভুক্তভোগী নারী মোসাঃ সালমা বেগম তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সম্পর্ক, গর্ভপাত ঘটানো, এবং আইনি স্বীকৃতি থেকে পলায়ন করার গুরুতর অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক ও ওয়াকফ প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী সালমা বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামী গত ৯ বছর মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং কোনো খোঁজখবর রাখেন না। এ অবস্থায় স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত মাজারের হিসাবরক্ষক সোহাগ মল্লিক তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
“সে ঢাকায় আমার জন্য বাসা ভাড়া নেয়, বরিশালেও একসঙ্গে থাকি। আমি গর্ভবতী হই, কিন্তু পরে সে ওষুধ খাইয়ে বাচ্চা নষ্ট করে। এখন সে রেজিস্ট্রি তো করছেই না, বরং আমাকে বয়স ও অতীত সম্পর্ক নিয়ে অপমান করছে”।

লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তারা তিন বছর স্বামী-স্ত্রীর মতো সংসার করেছেন। এখন সোহাগ কৌশলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে, যা সরাসরি নারী অধিকার লঙ্ঘন ও প্রতারণার শামিল।

সালমা বেগমের অভিযোগের পক্ষে পাঁচজন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দিতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয় তিনজন এবং বরিশাল শহরের আরও দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সম্পর্কের প্রেক্ষাপট, বাসাবদল ও গর্ভধারণ সংক্রান্ত তথ্য জানেন।

এটাই প্রথম নয়। স্থানীয় সূত্র ও নথিপত্র ঘেঁটে জানা গেছে, সোহাগ মল্লিকের বিরুদ্ধে আগেও চারটি নারীকেন্দ্রিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, সুমি নামে এক নারী তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল যা এখনো চলমান রয়েছে। এসব অভিযোগের কয়েকটি জাতীয় পত্রিকাতেও প্রকাশ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে মাজারের দানবাক্সের টাকা আত্মসাৎ, ঘুষের বিনিময়ে দোকান বরাদ্দ ও বাতিল, জাল ভাউচারে কেনাকাটা, এবং দানবাক্স আদায়কারীদের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত একাধিক অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ হয়েছে বিভিন্ন দপ্তরে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সোহাগ মল্লিকের পেছনে রয়েছে ক্ষমতাবান পরিবারের ছায়া। তার বাবা ইউনুস মল্লিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি গাড়ির চালক, যা তাকে প্রশাসনিক প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করে। পাশাপাশি মাজার পরিচালনা কমিটির দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদ মল্লিকের ঘনিষ্ঠ হওয়ায়, তার বিরুদ্ধে কেউ সহজে মুখ খুলতে পারেন না।

সোহাগ মল্লিক বলেন, “মাজারের সম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে, এটা আমি বুঝি। তবে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। দয়া করে আমার পেটে লাথি মারবেন না। সাক্ষাতে কথা বলব।” এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যে জায়গাটা মানুষের আস্থার কেন্দ্র, সেখানেই যদি প্রতারক ও দুর্নীতিবাজরা আশ্রয় পায়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?”

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..