শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সুন্দরগঞ্জে মা সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আগস্টের ১ম সপ্তাহে গাইবান্ধার তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন ছাত্র- জনতা বিরোধী স্লোগানদাতা এখন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষক মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে বিজিবির শ্রদ্ধা রংপুরে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি অভাবে আমন ধান চাষে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে শতকোটি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সড়কে ধানের চারা রোপণ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সড়কে ধানের চারা রোপণ ঢাকাস্থ মির্জাগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও কমিটি মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্ধর্ষ চুরি বেতাগীতে অগ্নিকান্ডে নিঃস্ব ৩ পরিবার, বসতঘর পুড়ে ছাই

অভিযানের পরও হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলণ- হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

রাউজান (চট্রগ্রাম) প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫৭৯১ বার পঠিত

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুমেও  হালদা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলণ করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামী পাড়ার অংশে প্রায় এক কিলোমিটার পাইপ ব্যবহার হালদা নদী থেকে  অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এছাড়াও সর্ত্তারঘাট , পশ্চিম গহিরা, নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের তেলপারই সেতুর পশ্চিম পাশে হালদা নদী থেকে যান্ত্রিক নৌযানে বালু উত্তোলণ করা হচ্ছে।

বালু উত্তোলন করে নৌযান ভর্তি করে নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নদীমপুর ইন্দিরাঘাট বাজারের দক্ষিণ পাশে ও গহিরা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় এনে নদীর তীরে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে।  নদীতে বালু মহল ইজারা দেওয়া বন্ধ করা হলেও সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে এক শ্রেনীর বালুখেকোরা প্রতিনিয়ত হালদা নদীতে ড্রেজার ও নৌযানের মাধ্যমে বালু উত্তোলণ করছে। নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে নদী ভাঙ্গ। নষ্ট হচ্ছে নদীর পরিবেশ ভারসাম্য। হুমকিতে পড়ছে মা- মাছসহ নদীর জীববৈচিত্র্য। অবৈধভাবে নদী থেকে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলণ করা হলেও সরকার বঞ্চিত  হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হালদা নদীতে প্রতিবছর চৈত্র থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে যেকোনো সময় প্রবল বর্ষণ ও বজ্রপাত হলে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ ডিম ছাড়ে। এ সময় রাউজান-হাটহাজারীর ডিম সংগ্রহকারী ও মৎস্যজীবীরা নদী থেকে নৌকা ও জাল বসিয়ে মাছের ডিম সংগ্রহ করেন। নদীতীরে মাটির কুয়ায় ও হ্যাচারিতে সংগ্রহ করা ডিম ফুটিয়ে রেণু উৎপাদন করা হয়।হালদা নদীর ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার মৎস্যচাষি ও মৎস্য খামারিরা কিনে নিয়ে পুকুর-জলাশয়ে ফেলে মাছের চাষ করেন। এ কারণে মা মাছ রক্ষায় হালদা নদীতে বালু উত্তোলণ, যান্ত্রিক নৌযান চলাচল এবং মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিনিয়ত নদী থেকে বালু উত্তোলণ ও মাছ শিকার করেছে  একটি চক্র।

স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীদের অভিযোগ, হালদা নদীর দুই পাড়ে এখন মৎস্যজীবীদের মৌসুমি ডিম সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে।নদীতে মা মাছের ডিম পাড়ার এমন সময়ে হালদার মুখ ও রাউজানের বিভিন্ন পয়েন্টে বালুবাহী বড় বড় যান্ত্রিক নৌযানের উৎপাত বেড়েছে। যার কারণে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নদীতে প্রতিনিয়ত যান্ত্রিক নৌযান চলাচলের কারণে ডলফিন ও মা মাছ মারা যাচ্ছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, গত সাত মাসে হালদা নদীতে ৫৮ টি অভিযানে ৬৫ হাজার ২০০ মিটার জাল উদ্ধার করে আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে। আনুমানিক মূল্য ২০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার জাল। নদী থেকে মাছ শিকার করার অপরাধে ৮ জন ব্যক্তিকে ১লক্ষ ১৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড জরিমানা আদায় করা হয়েছে। প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে হালদা ও কর্ণফুলী নদীর মোহনা রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন গ্রামের গণি মিয়ার ঘাটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট জিসান বিন মাজেদের নেতৃত্বে পরিচালনা করে বালু উত্তোলণ করার অপরাধে দুজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে  লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এতো অভিযানের পরও থামছে না হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলণ এবং মা মাছ শিকার।

অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ জানান, হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..