রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি, আটক ৫ ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩১ চার-পাঁচ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা আসবে সুন্দরগঞ্জে মা সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আগস্টের ১ম সপ্তাহে গাইবান্ধার তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু উদ্বোধন ছাত্র- জনতা বিরোধী স্লোগানদাতা এখন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষক মাহেরিন চৌধুরীর সমাধিতে বিজিবির শ্রদ্ধা রংপুরে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি অভাবে আমন ধান চাষে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে শতকোটি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সড়কে ধানের চারা রোপণ রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সড়কে ধানের চারা রোপণ

ছাত্র- জনতা বিরোধী স্লোগানদাতা এখন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫
  • ৫৭৫৫ বার পঠিত
একদিকে নিজেকে “সততার প্রতীক” বলে প্রচার, অন্যদিকে জুলাই আন্দোলন চলাকালীন  রাজপথে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে স্লোগান। এই দ্বিচারিতা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কে পটুয়াখালীর বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. খালেদুর রহমান মিয়া। ছাত্র জনতার বিপক্ষে মিছিল দেয়ার ভাইরাল ভিডিওতে  তাকে দেখা যায় বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করা। তাকে দেখা গেছে পটুয়াখালীর প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন ছাত্র জনতার প্রোগ্রামে এবং তিনি এখন চলমান নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব।
৫ই আগস্টের পর পটুয়াখালীতে সিভিল সার্জন হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পূর্বে তিনি ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শৃঙ্খলা বিভাগের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।  জন্মসূত্রে ফরিদপুরের বাসিন্দা এই কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি নিক্সন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে প্রশাসনিক মহলে পরিচিত। দীর্ঘ কর্মজীবনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং দলীয় আনুগত্য নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
 গত বছর জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান যখন দেশব্যাপী জোরদার ছিল, তখন একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ডা. খালেদুর রহমান মিয়াকে দেখা যায় সরাসরি ওই আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে।
আন্দোলন চলাকালীন সর্বশেষ ৩ আগষ্ট একদল কর্মকর্তা ঢাকার রাজপথে নামেন সাধারণ ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিছিল করতে।  ওই মিছিলে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করেন এবং ছাত্র জনতার বিপক্ষে “এক দফা কবর দে” বলে স্লোগান দিতে দেখা যায় তাকে।
ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের কিছুদিন পর ডাঃ খালিদুর রহমান মিয়া সিভিল সার্জন হিসেবে পটুয়াখালীতে যোগ দেন। স্থানীয় ছাত্র জনতার মধ্যে তাকে নিয়ে অনেক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকে একে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা কিংবা সিভিল সার্জন এর অপকৌশল বলে মনে করছেন। চলতি জুলাই মাসে তিনি বিভিন্ন সেমিনার, ইভেন্ট ও সভায় নিজেকে ‘সততা’র প্রতীক ও ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সহযোদ্ধা হিসেবে প্রচার করে চলেছেন। একদিকে তোষামোদ, অন্যদিকে নিজের অতীত ঢাকার চেষ্টা। তবে এই কৌশল চোখ এড়াচ্ছে না জনসাধারণের। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে সক্রিয় আন্দোলন করা একজন সরকারি কর্মকর্তা এই জুলাই মাসে আন্দোলন করা ছাত্র জনতা ও শহীদ পরিবারদের নিয়ে সেমিনার ও পুরস্কার দেয়ার কথা ভাবছেন যা নিয়ে পটুয়াখালী সাধারণ জনতার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পটুয়াখালীতে বর্তমানে স্বাস্থ্য সহকারী পদে ১২৪ জনের পুনঃ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। স্থগিত হওয়া প্রথমবারের নিয়োগের  বিভিন্ন উপজেলার কোঠা গুলো পুনরায় যাচাই-বাছাই ও সম বণ্টন না করে পূর্বের সিভিল সার্জন এর বৈষম্য নীতি অনুসরণ করে পুনঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন।  এই বোর্ডে ডা. খালেদুর রহমান মিয়া সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন। সভাপতি হিসেবে রয়েছেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক। ছাত্র জনতা ও নাগরিক সমাজের শঙ্কা এই নিয়োগ বোর্ডের নেতৃত্বে থাকা ডা. খালেদুর রহমান মিয়ার অতীত রাজনৈতিক পক্ষপাত ও ছাত্রবিরোধী অবস্থান সুষ্ঠু নিয়োগের পথে অন্তরায় হতে পারে। অভিযোগ উঠছে, নিষিদ্ধ ও বিতর্কিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য কিংবা জুলাই আন্দোলনের বিরোধীদের পরিবার থেকে প্রার্থী নির্বাচন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার আশঙ্কা রয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, কোন সরকারি কর্মকর্তা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারেন না, মিছিল বা স্লোগানে অংশগ্রহণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অথচ ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায় তিনি সরাসরি একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ও বিপ্লবী ছাত্র জনতার বিপক্ষে রাজনৈতিক স্লোগান দিচ্ছেন।
ভাইরাল ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার পর পটুয়াখালীসহ দেশব্যাপী বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা তার অপসারণ এবং শাস্তির দাবি তুলেছেন। তাদের দাবি এই কর্মকর্তার মাধ্যমে কোনোভাবেই স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা আশা করা যায় না। চাকরি বিধি লংঘন করে একটি রাজনৈতিক মিছিলে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন তারা মেনে নিতে পারবেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, ঐদিন ছিল ৩ আগস্ট আমার সহকর্মীরা জোর করে ধরে আমাকে মিছিলে নিয়ে যায় তবে তাদেরকে আমি চিনি না। স্বাস্থ্য ডিজি অফিসের সামনেই আমরা মিছিল করেছি। তবে পরবর্তীতে আমার অফিস কলিগদের কে এই ব্যাপারে মৌখিক শেয়ার করেছি।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..