নিজস্ব গবেষণা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানসম্মত বীজ সরবরাহে এগিয়ে বাংলাদেশের কৃষি আজ বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জমির পরিমাণ হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৃষি খাতকে আরও উৎপাদনশীল ও টেকসই করে তোলার যে প্রচেষ্টা চলছে, তার অন্যতম অগ্রদূত কৃষিবিদ সীড লিমিটেড (KSL)। দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং কৃষকের আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
জাপান, থাইল্যান্ড, ইতালি , কোরিয়া, চায়না এবং ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন কৃষি-অগ্রগামী দেশ থেকে উন্নত ও মানসম্মত বীজ আমদানির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে নতুন জাত ও প্রযুক্তি পৌঁছে দিচ্ছে। কৃষিবিদ সীড লিমিটেড শুধুমাত্র বীজ আমদানি নির্ভর নয়, বরং দেশের মাটিতেই নিজস্ব গবেষণা উদ্ভাবন ও উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ শরীফ মোঃ তসলিম রেজা বলেন “আমরা বিশ্বাস করি, একটি মানসম্মত বীজই কৃষি উৎপাদনের মূল ভিত্তি। কৃষিবিদ সীড লিমিটেড দেশের কৃষকদের কাছে সেই মানসম্মত বীজ পৌঁছে দিতে কাজ করছে, যাতে তারা একই জমিতে কম খরচে, অল্প সময়ে অধিক ফলন পেতে পারেন।”
তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব গবেষণা ও উৎপাদন ইউনিটে স্থানীয় জলবায়ু ও মাটির সাথে উপযোগী জাত উদ্ভাবনে ব্রিডাররা নিরলস পরিশ্রম করছেন। ইতিমধ্যে তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জনপ্রিয় সবজী ও পেপের অনেক গুলো জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে কৃষি বিপ্লবের যুগান্তর ভূমিকা পালন করেছে।
কৃষিবিদ সীড লিমিটেড দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি), গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্তর্জাতিক কোম্পানি যেমন বায়ার ও সিনজেনটার সাথে ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পাদন করেন।
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সমঝোতা স্মারক (MOU) সই করেছে। এই সহযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবিত নতুন জাত, রোগ প্রতিরোধী হাইব্রিড এবং জলবায়ু সহনশীল বীজ কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিষ্ঠানটি নিরলসভাবে কাজ করছে এবং প্রশংসা অর্জন করেছে।
বীজ বিপণনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি কৃষক পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তর, মাঠ দিবস আয়োজন, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এভাবে কৃষকরা নতুন জাত ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ড. আলী আফজাল, যিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশনের (BSA) সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়া প্যাসিফিক সীড এসোসিয়েশনের (APSA) কার্যকরী সদস্য, তিনি বলেন বাংলাদেশের কৃষি খাত এখন এক রূপান্তরের পথে। কৃষিবিদ সীড লিমিটেড স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় দেশের কৃষিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে । তিনি আরো বলেন আমাদের লক্ষ্য শুধু ব্যবসা নয়, কৃষকের জীবনমান উন্নয়ন এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ কৃষির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। কৃষিবিদ সীড লিমিটেডের উচ্চ ফলনশীল ও মানসম্মত বীজ ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছেন। এর ফলে একদিকে কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও মজবুত হচ্ছে।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহকৃত হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল ধান, ভুট্টা, সবজি, আলু এবং অন্যান্য ফসলের জাত সমূহের বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। কৃষকদের আস্থা অর্জনই কৃষিবিদ সীডের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
আগামী দিনে কৃষিবিদ সীড লিমিটেড বাংলাদেশের কৃষিকে আরও উদ্ভাবননির্ভর ও প্রযুক্তিসমৃদ্ধ করে তুলতে কাজ করবে। প্রতিষ্ঠানটি বায়োটেকনোলজি ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে, যাতে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন আরও টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল হয়।
বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষিবিদ সীড লিমিটেড এখন একটি নির্ভরযোগ্য নাম। দেশীয় গবেষণা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, কৃষকবান্ধব কর্মসূচি এবং মানসম্মত বীজ সরবরাহের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সবুজ বিপ্লবে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রচনা করছে।