মনজুর মোর্শেদ তুহিন (জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী):
পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর বিশিস্ট ব্যবসায়ী শিবু লাল দাস অপহরন করে ২০ কোটি টাকা মুক্তিপন এবং গুম করার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মামুন ওরূপে ল্যাংড়া মামুনের ৬ সহযোগীকে গ্রেফতারসহ অপহরন গ্যাংয়ের বিশাল নেটওয়ার্ক উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে বলে ১৭ এপ্রিল রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স কক্ষে ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম পিপিএম।
তিনি জানান, গত ১১ এপ্রিল রাতে গলাচিপা থেকে পটুয়াখালীতে প্যারোডা জীপে করে আসার পথে বিশিস্ট ব্যবসায়ী শিবু লাল দাস,(৬০) ও তার ড্রাইভার মোঃ মিরাজ(২২) অপহৃত হয়। এ অপহরনের পরদিন ১২ এপ্রিল রাতে অপহৃত শিবু দাসের ছেলে বুদ্ধদেব দাস সদর থানায় সাধারন ডাইরি করেন, যার নং- ৫৪২। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পিপিএম এর নেতৃত্বে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আহমাদ মাঈনুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাজেদুল ইসলাম৷ সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন থানার পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার বিশেষ দল সাড়শি অভিযান পরিচালনা করে ১২ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০ টার সময় শহরের কাজীপাড়াস্থ এসপি কমপ্লেক্সের নীচে আন্ডারগ্রাউন্ডের দুই হাত, দুই পা, মুখে কসটেপ বাধা প্লাস্টিকের বস্তা ভর্তি অবস্থায় শিবু দাসকে ও ড্রাইভার মিরাজকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। একই দিন ১২ এপ্রিল রাত দেড়টায় আমতলী থানাধীন এ রহমান ফিলিং স্টেশন হতে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ভিকটিমের প্যারোডা জীপ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় জীপের মধ্য থেকে একটি ভাঙ্গা খেলনা পিস্তল জব্ধ করা হয়।
ভিকটিমদ্বয়কে উদ্ধার স্থান এসপি কমপ্লেক্সের নীচ হতে অওহরনের কাজে ব্যবহৃত হাত, পা, চোখ, মুখ বাধার জন্য কস্টেপ, গামছা, রশি, দুটি প্লাস্টিকের বস্তা এবং সন্দিগ্ধ চুল, অপহরনের কাজে ব্যবহৃত অটোরিক্সা, অটোতে থাকা অপর বস্তায় মাতৃছায়া স্টিকারযুক্ত শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। অটোর চালক বিল্লাল প্যাদা জানায় আমার অটো যে ভাড়া করেছিল তার এক পা ল্যাংড়া এবং অটোরিক্সয় সে সহ চারজন ছিলাম এবং পিছনের সিটে সাদা রং এর কয়েকটি প্লাস্টিকের বস্তা তারা নিয়ে আসে। ভিকটিম ও অটো চালকের জবানবন্দীর সাথে মিল পাওয়ায় এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, সিসিটিভির ফুটেজ, তথ্য সূত্রে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পুলিশ ল্যাংড়া মামুনকপ চিহ্নত করা হয়ে। এ অপহরন ঘটনায় ১০ থেকে ১৫ জন দুর্বৃত্ত জড়িত ছিলো বলেও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পিপিএম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। গেফতারকৃত ৬ আসামী হচ্ছে- শামিম আহমেদ(৩৯), আক্তারুজ্জামান সুমন(৩২), মো. আতিকুর রহমান পারভেজ (৩২), মো. মিজানুর রহমান ওরপে সাবু গাজী, (৪০), মো. বিল্লাল (৪১) ও মো. সাব্বির হোসেন ওরপে জুম্মন(২২)। অপহরনের মুল হোতাসহ বাকি দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমাদ মাঈনুল হাসান জানান।