বরগুনার আমতলীতে দাওয়াত না দেওয়ায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের আয়োজন করা দুপুরের খাবার খেয়ে ফেলেছেন গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে আসা ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী। শুধু খেয়েই ক্ষান্ত হননি, আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য রান্না করা অবশিষ্ট খাবারও নষ্ট করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন।
এ ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। এলাকাবাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতলী উপজেলার কালিবাড়ী ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায়।
জানা যায়, সম্প্রতি গঠিত মাদ্রাসার নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রথম সভা উপলক্ষে প্রায় ৫০ জন অতিথির জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ওই সভায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাহবুব কাজী ও রিপন কাজীর নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাদ্রাসায় প্রবেশ করেন এবং শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। পরে তারা অতিথিদের খাবার খেয়ে ফেলেন এবং অবশিষ্ট খাবার টিস্যু, উচ্ছিষ্ট খাবার ও নোংরা পানি মিশিয়ে নষ্ট করে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ সময় তারা শিক্ষক, কর্মচারী ও অতিথিদের হুমকি দিয়ে চলে যান। ঘটনায় ভয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
পরে ঘটনার ছবি নিজ ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশ করেন রিপন কাজী। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে মাহবুব কাজী বলেন, মাদ্রাসায় আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে অনুষ্ঠান করায় ও আমাদের দাওয়াত না দেওয়ায় আমরা খাবার খেয়েছি। তবে খাবার নষ্ট করিনি।
অন্যদিকে, অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা কক্ষে প্রবেশ করে আমাদের গালাগাল করে। পরে খাবার খেয়ে অবশিষ্ট খাবারে টিস্যু, উচ্ছিষ্ট খাবার ও নোংরা পানি ফেলে নষ্ট করেছে। খাবার শেষে আমাদের হুমকি দিয়েও চলে গেছে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মৃধা বলেন, এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সুরে কথা বলেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন ভিপি।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, বিষয়টি অবগত আছি। অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।