বিয়ের কথা গোপন করে মোবাইল ফোনে বন্ধুত্ব। এরপর ভালোলাগা থেকে ভালোবাস। মাঝখানে বাঁধা দুই বাংলার সীমান্ত। তবুও মন মানেনি। শেষ পর্যন্ত প্রেমের টানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের রংপুরে আসে সোহেল আলী নামে এক যুবক। দেখাও হয় প্রেমিকার সঙ্গে। কিন্তু মন ভেঙে যায় দূরদেশ থেকে আসা প্রেমিক সোহেলের। জানতে পারেন, তার প্রেমিকাও বিবাহিত। এক বছরের প্রেমের স¤পর্কে সোহেল আলীর ন্যায় তার প্রেমিকাও গোপন রেখেছিলেন বিবাহিত জীবনের গল্প। কিন্তু প্রেমিকার বাড়িতে আসার পরে ঘটে বিপত্তি। বিবাহিত হওয়ায় দু’জনেরই পরকীয়ার সম্পর্কে পড়ে টান।
অবশেষে পুলিশের সহায়তায় ভারতীয় এই যুবক ফিরে যান নিজ দেশে। ৭ জুলাই সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জানা যায়, প্রেমের টানে বৈধ ভিসায় সীমান্ত পেরিয়ে আসা ভারতীয় যুবক সোহেল আলী (৩২) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার রাণীনগর থানার কলবলিতলা গ্রামের মরজেম মন্ডলের ছেলে।
এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার সারাই উল্লাপাড়া গ্রামের এক নারীর সঙ্গে তার প্রেমের স¤পর্ক গড়ে উঠে। গত ৫ জুলাই শনিবার দিবাগত রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছে প্রেমিকার বাড়িতে ভারতীয় ওই যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। পরে তাকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন রবিবার সকালে আটক করা ভারতীয় নাগরিককে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানায় হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
সেখানে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর হারাগাছ থানা পুলিশ স্কটসহ সোহেল আলীকে লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে রাতে হস্তান্তর করা হয়। বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সোমবার সকালে ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিক সোহেল বর্ডার পার হয়ে চেংরাবান্ধা ইমিগ্রেশনে চলে যান। এঘটনা স¤পর্কে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর বিভাগ) মারুফ আহমেদ বলেন, ভারতীয় যুবক সোহেল আলীর সঙ্গে হারাগাছের এক প্রবাসীর স্ত্রীর অনলাইনে প্রেমের স¤পর্ক গড়ে উঠে। এক বছরের বেশি সময় ধরে অনলাইনে তাদের কথাবার্তা হয়।
গত ৪ জুলাই শুক্রবার ভারতীয় ওই যুবক পাসপোর্ট ও ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রাজশাহীর পবা উপজেলায় মামাতো ভাইয়ের বাড়িতে উঠেন। সেখান থেকে গত শনিবার রাতে প্রেমিকার বাড়িতে দেখা করতে আসে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে সেনাবাহিনীকে জানান। খবর পেয়ে রাতেই ওই নারীর বাড়ি থেকে ভারতীয় নাগরিক সোহেলকে আটক করে সেনাবাহিনী। পরে রবিবার হারাগাছ থানা পুলিশের কাছে ভারতীয় নাগরিক সোহেলকে হস্তান্তর করে।
খবর পেয়ে রাতে হারাগাছ থানায় সোহেলের খোঁজ নিতে আসে রাজশাহী পবার উপজেলার স্বজনরা। মারুফ আহমেদ বলেন, ওই নারী থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানিয়েছেন আটক ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। পরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রবিবার রাতে সোহেলকে বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সোমবার সকালে তিনি নিজ দেশে চলে যান।
ভারতীয় নাগরিক সোহেল আলীর মামাতো ভাই রাজশাহী পবার ডাঙ্গিপাড়া গ্রামের রফিক মিয়া বলেন, সোহেল বিবাহিত এবং তিনি ভারতে প্রাইভেটকার চালক। গত শনিবার তিনি রাজশাহীতে যাওয়ার কথা বলে বের হন এবং রাতে মোবাইলে জানান রংপুরে আছেন। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে জানতে পারি, সোহেল পরকীয়া করতে গিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে ধরা পড়েছে।