শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
আমতলী থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট! এমন আলোচিত ঘটনা জানেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসুস্থ সাবেক মেয়রের পাশে মানবিক নেতা: হাসপাতালে সাক্ষাৎ করলেন আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান তাড়াইলে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে ‘বিসিক উদ্যোক্তা মেলা-২০২৫’ নলছিটিতে ইয়ুথ আউটরিচ কমিউনিকেইটার টিম গঠনের লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণজাগরণ দল পটুয়াখালী সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন ছাগলে কলমি শাক খাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা — একই পরিবারের চারজন আহত, বরগুনা-১ আসনের মনোনয়নে ক্ষুব্দ আমতলী-তালতলী প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এমরান চৌধুরী মোরেলগঞ্জে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে রোপণ করা তাল গাছের অস্তিত্ব নেই

রংপুর ব্যুরো:
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫
  • ৫৭৯২ বার পঠিত

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রাকৃতিব দূর্যোগ বজ্রপাতের কবল থেকে মানুষসহ প্রাণিকুলের জীবন রক্ষা করার জন্য ২০১৭ সালে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় দুই লক্ষাধিক তালগাছের চারা ও বীজ লাগানো হয়েছিল। লাগানো ওই সব গাছের অধিকাংশেরই হদিস নেই। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ৯৫ শতাংশ গাছই নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে কতটি তালগাছ জীবিত রয়েছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে। বন বিভাগও বলেন কৃষি অফিসের লাগানো তাল গাছের অধিকাংশই নেই।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলায় এক লক্ষ ১৬ হাজার তালের চারা ও বীজ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতিটি উপজেলায় ২হাজার করে বীজ ও চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনেক স্থানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি লাগানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি লাগানো হয়েছে। এ জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার।

তবে লাগানো হয়েছিল ১৫ হাজার চারা ও বীজ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার। কিন্তু সেখানে ২০ হাজার তালের চারা ও বীজ লাগানো হয়েছিল। রংপুরের সদর উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় বজ্র নিরোধক ও পরিবেশবান্ধব গাছ হিসেবে তাল বীজ রোপণ করা হয়েছিল। ওই সময় হরিদেবপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, বাড়ি ও পতিত জমিতে তাল গাছের চারা ও বীজ রোপণ কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন কৃষি অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার তৎকালীন পরিচালক আব্দুল হান্নান। লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার থাকলেও রংপুর সদরেই ৫ হাজার তালের বীজ ও চারা লাগানো হয়েছিল। এভাবেই রংপুর বিভাগের প্রতিটি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি তালগাছ লাগানো হয়েছিল বলে সে সময় দাবি করে কৃষি বিভাগ। সেই হিসেবে দুই থেকে আড়াই লক্ষ চারা ও বীজ লাগানো হয়েছিল।

সরেজমিনে রংপুর সদর উপজেলার হরিদেবপুরসহ কয়েকটি এলাকায় লাগানো সেইসব তাল গাছের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, রংপুর বিভাগের অন্যান্য উপজেলাাতেও একই অবস্থা। কোথাও ১০ শতাংশ গাছ টিকেনি। সেই সময়ের এই প্রকল্প মাঠে মারা গেছে।

সূত্রমতে দুই লক্ষাধিক তালগাছের চারা ও বীজ নষ্ট হয়েছে। এবিষয়ে রংপুর কৃষি স¤পসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, কী পরিমাণ তাল গাছ রয়েছে, এ ধরনের কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। রংপুর বন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের অধীনে ৩৫টি উপজেলা রয়েছে।

আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের রোপণকৃত চারা ও বীজের অস্তিত্ব পাচ্ছি না। কোথাও কোথাও দুই-একটি গাছ ভাগ্যক্রমে বেঁচে রয়েছে। বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না বলেন, তালগাছ বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। তাল গ্রীষ্মকালীন ফল। তাল গাছ পাম গোত্রের অন্যতম দীর্ঘ গাছ, যা উচ্চতায় ৩০ ফুট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তালের পাতা পাখার মতো ছড়ানো তাই গাছগুলোকে একত্রে ফ্যান-পাম বলা হয়। তাল গাছ ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক অঞ্চলেই জনপ্রিয়। কারণ এর প্রায় সব অঙ্গ থেকেই কিছু না কিছু কাজের জিনিস তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, তাল পাতা দিয়ে ঘর ছাওয়া, হাতপাখা, তালপাতার চাটাই, মাদুর, আঁকবার পট, লেখবার পুঁথি, কুন্ডলী, পুতুল ইত্যাদি বহুবিধ সামগ্রী তৈরি হয়। তালের কান্ড দিয়েও বাড়ি, নৌকা, হাউস বোট ইত্যাদি তৈরি হয়। তালের ফল এবং বীজ দুটোই বাঙালি খাদ্য। তালের ফলের ঘন নির্যাস থেকে তাল ফুলুরি তৈরি হয়। তালের বীজও খাওয়া হয় তালশাঁস নামে। তাল গাছের কান্ড থেকেও রস সংগ্রহ হয় এবং তা থেকে পাটালি ও মিছরি গুড় তৈরি করা হয়। তালের বীজ রোপণ করার এক বছরের মাথায় চারা গজায়। ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ফল দিতে পারে। সরকারের তাল গাছ রোপণ কর্মসূচি বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমাবে নিঃসন্দেহে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..