শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আমতলী থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট! এমন আলোচিত ঘটনা জানেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসুস্থ সাবেক মেয়রের পাশে মানবিক নেতা: হাসপাতালে সাক্ষাৎ করলেন আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান তাড়াইলে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে ‘বিসিক উদ্যোক্তা মেলা-২০২৫’ নলছিটিতে ইয়ুথ আউটরিচ কমিউনিকেইটার টিম গঠনের লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণজাগরণ দল পটুয়াখালী সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন ছাগলে কলমি শাক খাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা — একই পরিবারের চারজন আহত, বরগুনা-১ আসনের মনোনয়নে ক্ষুব্দ আমতলী-তালতলী প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এমরান চৌধুরী মোরেলগঞ্জে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

নদী ভাঙন এলাকা ২শত মিটার হলেও জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ৩৯ মিটারে

রংপুর ব্যুরো:
  • আপলোডের সময় : সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫
  • ৫৭৯৫ বার পঠিত

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়ার লালচামার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ৩৯ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলছে। অথচ নদী ভাঙছে ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ও জিও টিউব কোনো কাজে আসছে না।

ইতোমধ্যে কাপাসিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১০০টি পরিবারের বসতভিটা ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সেই সাথে প্রায় ২০০ পরিবার ও হাজার একর ফসলি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজকুমার বিশ্বাস কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

এসময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ভাঙনের মুখে পরিবারগুলো তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর হতে অন্য চরে যাওয়া-আসা করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে শুধুমাত্র ভাঙন কবলিত পরিবারগুলাকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ার সাথে সাথে শুরু হয় নদী ভাঙন।
নদী পাড়ের মানুষরা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘদিনেও স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধ, ড্রেজিং, নদী খনন ও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। যার কারণে প্রতিবছর পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি, হাজারও একর ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদী গর্ভে। সরকার কোটি টাকা খরচ করে ব্লক, জিও ব্যাগ এবং জিও টিউব ফেলেও ভাঙন ঠেকাতে পারছে না। কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটিকাপাশিয়া লালচামার গ্রামের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩৯ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলছে। কিন্তু এলাকায় প্রায় ২০০ মিটার জুড়ে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

৩৯ মিটারে জিও ব্যাগ ফেলে কোনো কাজ হবে না। ভাঙন ঠেকাতে গেলে গোটা ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। হরিপুর লখিয়ার পাড়া গ্রামের সোলেমান মিয়া বলেন, প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। একজন চরবাসীকে মৌসুমে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ বার ঘরবাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না।

কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া বলেন, ইউনিয়নের উত্তর লালচামার গ্রামে তিস্তার তীব্র ভাঙনে ১০০টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুল, মসজিদসহ ভাঙনের মুখে শতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, নদী খনন, ড্রেজিং, স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধকল্পে বহুবার চাহিদা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ভাঙন রোধে প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে।

স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকানো না হলে চরবাসীর দুঃখ কোনোদিনও দূর হবে না। ভাঙনে প্রতিবছর ৪ শতাধিক বসতবাড়ি এবং হাজার একর ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজকুমার বিশ্বাস বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে শুধুমাত্র শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, কাপাসিয়া ইউনিয়ন ও শ্রীপুর ইউনিয়নের পুটিমারি এলাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে সাবমিট করেছি। এটার বিষয়ে আগামী সপ্তাহে মিটিং হবে, মন্ত্রণালয়ে যাবে, স্টেপ বাই স্টেপ। এটা মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ হবে।

এটার অনুমোদন পেলে ওইসব এলাকায় স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক দেওয়া হবে। তিনি বলেন, জরুরি হিসেবে যেসব এলাকায় বসতবাড়ি রয়েছে, এসব বসতবাড়ি ভাঙন রোধে ৩৯ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে। পুরো কার্যক্রমের জন্য ঊর্ধ্বতনকে জানানো হয়েছে, যা সিদ্ধান্ত হবে তা জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..