বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
এলডিসি উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে স্পষ্ট হবে সরকার কতটুকু সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারবে : প্রেস সচিব দুমকিতে প্রবাসীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকিয়ার ফাঁদে জড়িয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ আড়াইহাজারে সামাজিক নিরাপত্তা ও মাদক প্রতিরোধে করনীয় শীর্ষক আলোচনা ও সাংবাদিক ইউনিয়নের পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত নান্দাইলে উৎসবমুখর পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন ॥ সরকারি বাঙলা কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন তাড়াইল প্রশাসনের উদ্যোগে ঝাকজমকভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন মনোহরদীতে পঞ্চাশকুড় দাখিল মাদ্রাসার সুপারকে লাঞ্চিত: থানায় অভিযোগ সাভারে ব্যাক টু ব্যাক ছিনতাই ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে তাড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল

প্রতিষ্ঠার একযুগেও পূর্ণতা পায়নি ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর

সাব্বির আলম বাবু, ভোলা প্রতিনিধিঃ
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৫৯৬০ বার পঠিত

প্রাণের আবেগকে পুঁজি করে শত্রুর মরণ অস্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন বাংলার দামাল ছেলেরা। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময় বাংলার আকাশে উড়ে লাল সবুজের পতাকা। দেশের জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল। স্বাধীনতার তিন যুগ পর বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল নামে ভোলায় গড়ে তোলা হয় গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। তবে হতাশার কথা নির্মাণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও প্রচারের অভাবে পূর্ণতা পায়নি বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি। স্থানীয়দের প্রত্যাশার পালে লাগেনি প্রাপ্তির হাওয়াও। পাঠকদের চাহিদানুযায়ী বই নেই এখানে। শহর থেকে দূরে এই জাদুঘর নিয়ে নেই কোনো প্রচার প্রচারণা। ফলে দিন দিন আকর্ষণ হারাচ্ছে এই গ্রন্থাগার ও জাদুঘর। সিপাহী মোস্তফা কামাল যখন মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন তখন তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। ১৯৭১ সালে ১৮ এপ্রিল সহযোদ্ধাদের জীবন রক্ষায় নিজের প্রাণ বিসর্জন দেন এই বীর। সেই আত্মত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে মেলে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি। ২০০৮ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে একটি বিশেষ প্রকল্পের মাধ্যমে বীরশ্রেষ্ঠ’র গ্রামে তার নামে নির্মাণ করা হয় গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। যা নিয়ে প্রথম দিকে দর্শনার্থীদের ছিলো তুমূল আগ্রহ। তবে দিনে দিনে সেই আগ্রহ এখন হতাশায় রূপ নিয়েছে। দর্শনার্থীদের অভিযোগ স্মৃতি জাদুঘরটিতে মুক্তিযোদ্ধের এমন কোন স্মৃতি চিহ্ন নেই যা দেখতে দর্শনার্থীরা ছুটে আসবে। আছে অবকাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে বই স্বল্পতাও।
জাদুঘরটিতে দেখতে আসা দর্শনার্থী শান্ত, ইমতিয়াজ, ডালিমসহ আরো অনেকেই জানান, একজন বীরশ্রেষ্ঠ’র নামে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরে সেই বীরশ্রেষ্ঠ’র তেমন কোনো নির্দশন নেই যা দর্শনার্থীদেরকে আকর্ষিত করবে। এখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের কোনো স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত নেই। দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এখানে এসে ফিরে যায় হতাশা নিয়ে।
জাদুঘরে ঘুরতে আশা রাব্বি, তামিম, ইমাসহ আরো অনেকেই জানান, জাদুঘরটি বাইরে থেকে সুন্দর হলেও ভেতরে তেমন কিছু নেই। আগে যা ছিলো তাই। নতুনত্ব তেমন কিছু নেই। এমনকি ২০০৮ সালে জাদুঘরটি নিমার্ণ হওয়ার পরে এখানে যেই বইগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলোই রয়েছে। নতুন করে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক কোনো বই দেয়া হয়নি। ফলে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর পাঠক এসে হতাশা হয়ে ফিরে যায়। জাদুঘরটিকে ডিজিটাল করে মুক্তিযুদ্ধাকালীন ছবি, ভিডিও আর্কাইভ থাকলে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারতো। বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ভাগিনা মো. আশেক বলেন, এই লাইব্রেরিটিতে ২ বছর ধরে বিনা বেতনে সহকারি লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করে আসছি। একজন বীরশ্রেষ্ঠ ভাগিনা হিসেবে আমাকে এই পোস্টে স্থায়ী করে বেতন দেয়ার দাবি জানান তিনি। বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ভাতিজা মো. সেলিম জানান, উদ্বোধনের সময়ে যে কয়টি বই নিয়ে পাঠাগার চালু হয়েছিলো এখনো সে অবস্থাতেই আছে। পাঠকদের চাহিদা অনুযায়ী এখানে নতুন করে কোনো বই সংগ্রহ করা হয়নি। উদ্বোধনের সময়ে দেয়া কিছু বই আর মোস্তফা কামালের ব্যবহৃত কয়েকটি ঘটি বাটি ছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য দেখার তেমন কিছু নেই এই জাদুঘরে। দু’একজন দর্শনার্থী যারা আসছেন তারা হতাশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। পাঠাগারের অবস্থাও করুন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভোলা জেলা পরিষদের তত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে এই জাদুঘরটি। ভোলা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন আল ফারুক জানান, জাদুঘরটিকে এরই মধ্যে সংস্কার করা হয়েছে। এর আধুনিকায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নতুন করে বরাদ্দ পেলে সেটাকে ডিজিটাল করা সম্ভব হবে। ভোলার গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের নামে প্রতিষ্ঠিত এই গ্রন্থাগার এবং স্মৃতি জাদুঘরের আধুনিকায়ন করার মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের প্রতি যথাযথ সম্মান জানাবে সরকার এমন প্রত্যাশা ভোলার সাধারণ মানুষের।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..