সাভারের বিরুলিয়া ও বনগাঁও ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের ভুক্তভোগী মানুষ বুধবার (২১ মে) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে গ্রামবাসীরা বলেন, জমি নেই, রাজউকের অনুমোদন নেই, পরিবেশের ছাড়পত্র নেই, দেখানো হচ্ছে ৮ হাজার ২৫১ বিঘা জমির নকশা। শুধু পেশীশক্তির ভয় দেখিয়ে ১০ গ্রাম দখলে নেয় এই ভূঁইফোঁড় আবাসন কোম্পানী। জমি রক্ষায় মানববন্ধন কর্মসূচি করায় তাঁদের বিরুদ্ধে উল্টো অপরাধী আখ্যা দিয়ে দফায় দফায় মারধর করে রেলিক সিটির সন্ত্রাসী বাহিনী। আহতরা যখন হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন তখন, উল্টো চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানিও করছে তারা।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করলেও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। হুমকি দিয়ে তারাই আবার থানায় গিয়ে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাধারণ ডায়েরি করে।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, রেলিক সিটির অন্যতম সদস্য ও ভূমিদস্যু নূরুজ্জামান ও তার বাহিনী জমি রক্ষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সাধারণ মানুষদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে এবং পরে তাদের বিরুদ্ধেই উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দিয়েছে। এসব ঘটনার পর সাভার মডেল থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হলেও অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং গ্রামবাসীদের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি তারা স্থানীয় থানায় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধেও মিথ্যা সাধারণ ডায়েরি করছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, বিরুলিয়া ও বনগাঁও ইউনিয়নের কমলাপুর, রাজারবাগ, ভবানীপুর, সাধাপুর, চাকুলিয়া প্রভৃতি গ্রামের মানুষের জীবিকা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অথচ তাদের ভিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে বালু ভরাট করে কৃষিজমি নষ্ট করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ভূমিদস্যু নূরুজ্জামান গত ২০ এপ্রিল ভাকুর্তায় এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পুরষ্কারপ্রাপ্ত অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও যমুনা টেলিভিশনের ইনভেস্টিগেশন সেলের প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য দিয়ে তিনি তাকে হেয় করেছেন।
তারা আরও জানান, এনবিআর এর সাবেক সদস্য, কর্ম কমিশনের সাবেক সদস্য, সাবেক অতিরিক্ত সচিবসহ প্রায় ৭০জন রেলিক সিটির কাছে তাদের জমি হারিয়ে সাভার মডেল থানায় একাধিক মামলা করেছেন। সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে কমপক্ষে ৭০টির ওপরে। রেলিক সিটির হাত থেকে গ্রামবাসীর বসত বাড়ি ও জমি রক্ষার দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ, অবৈধ দখল বন্ধ এবং ভূমিদস্যুদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।