বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শ্যামাসুন্দরীর ১০ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে: রিজওয়ানা হাসান গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ গেঞ্জিতে আজও ছেলেকে খুঁজে শহীদ আবু সাঈদের মা বেতাগীতে বিএমএসএফ এর ১৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে আলোচনাসভা গুলশানে স্পা অন্তরালে দিনে ও রাতে চলছে বাহারের ব্ল্যাকমেলই সহ মাদক বাণিজ্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী প্রকৌশলীদের হাতের মুঠোয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ভুয়া সনদে অবৈধ নিয়োগ: সাবেক মেয়রসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রাজনৈতিক উত্তেজনার তীব্রতায় তারেক জিয়াকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল তাড়াইল সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির পরিচিতি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  ঝালকাঠি জেলার শ্রেষ্ঠ ইউএনও নজরুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ উপজেলা নলছিটি

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী প্রকৌশলীদের হাতের মুঠোয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপলোডের সময় : বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫
  • ৫৭৫৩ বার পঠিত

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুগতরা ঘাঁটি গেড়ে বসে আছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে। সরকার পতনের এক বছর পরও জনগণের স্বাস্থ্যসেবা খাতের গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটি দোর্দণ্ড প্রতাপে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। এদের বিরুদ্ধে দেশের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমসহ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জমানায় হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে পিডি (প্রকল্প পরিচালক) হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন একেকজন। সেই সুবাদে আর্থিকভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠেছেন তারা। একই সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভান্ডার ভারতে পাচারের অভিযোগ রয়েছে বেশ আরো কয়েকজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি কয়েকজন প্রকৌশলীকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (‘র’) এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। ফ্যাসিবাদের বিগত বছরগুলোতে একাধিক তদন্তে প্রকল্প পরিচালকদের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়লেও কাউকেই শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। উপরন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সময় কেউ কেউ বাগিয়ে নিয়েছেন পদোন্নতি। বাগিয়ে নিয়েছেন বড় বড় নতুন প্রকল্প।

আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলীর মধ্যে রয়েছেন অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শিশির কুমার বিশ্বাস, তার স্ত্রী নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মিষ্ঠা দেবনাথ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র দে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী নাবিলা তাবাসসুম মিকি। তাদের বিরুদ্ধে এনএসআই অধিদপ্তরের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের গত ২৪ মার্চ দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এনএসআই অধিদপ্তরের পাঠানো সুপারিশের চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সুনিদির্ষ্টভাবে এদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগও পাওয়া গেছে, যা দুর্নীতি দমন কমিশনই এ তদন্ত করতে পারে। ওই চিঠির ধারাবাহিকতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এসব কর্মকর্তাদের দুদক তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এসব ব্যাপারে বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মীর আব্দুস সহিদ বলেন, ‘আমি শুনেছি এবং অনেক বিষয় পত্রপত্রিকায়ও আসছে। কিন্তু বেশি দিন হয়নি আমি দায়িত্বে এসেছি। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে তদন্তসহ যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে কেবল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তারা গোয়েন্দা সংস্থা বা নিজেরা তদন্ত করে যদি অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেয়, তাহলে কেবল আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের অধিদপ্তর, পরিদপ্তরগুলোতে প্রধান প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন প্রকৌশল পদে কর্মরত ছিলেন আওয়ামী সুবিধাভোগী প্রকৌশলীরা। তারাই ছিলেন উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনার মহা লুটপাটতন্ত্রের অন্যতম সহযোগী। হাসিনার অনুগত প্রকৌশলীদের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সাবেক সভাপতি আব্দুস সবুর। তিনি একাধারে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞাপন ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে সংসদ সদস্য সদস্য হয়েছিলেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনা উৎখাত হলেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরগুলো স্বপদে বহাল রয়েছেন আবদুস সবুর, তথা হাসিনার অনুগত প্রকৌশলীরাই।

শেখ হাসিনা বিভিন্ন দপ্তরে থরে থরে সাজিয়ে গেছেন অনুগত প্রকৌশলীদের। ‘বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের মাধ্যমে সাংগঠনিক কাঠামোর আওতায় রেখে তাদের পদায়ন করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এ ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ৩ আগস্ট প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম মিয়াকে আহ্বায়ক ও প্রকৌশলী শেখ সাদী রহমত উল্লাহকে সদস্য সচিব করে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর শাখা গঠন হয়। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ড. প্রকৌশলী এম হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী নূরুজ্জামান ১১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির অনুমোদন দেন।

সূত্র জানিয়েছে, পরিষদের আহ্বায়ক প্রকৗশলী নজরুল ইসলাম মিয়া বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত। ৩২ পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের পিডি তিনি। প্রকল্পটি ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২১ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত নজরুলের অনিয়ম দুর্নীতি ও অদক্ষতার কারণে তিন দফা মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পের আওতায় একটি পৌরসভাতেও পানি সরবরাহ সম্ভব হয়নি। একটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও চালু হয়নি। একটি পৌরসভাতেও ফিক্যাল স্ল্যাজ ট্রিটমেন্ট (মলমূত্র ব্যবস্থাপনা) প্ল্যান্টের কাজ শেষ হয়নি। সব সময় তিনি পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করান। সরকারের বিপুল অর্থেও অপচয় ঘটিয়েও তিনি এই প্রকল্পে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

কমিটির প্রথম সদস্য তুষার মোহন সাধু খাঁ ছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক। তিনি ছিলেন একাধারে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্প ও সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের পরিচালক। আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পটি দুই হাজার ২০০ কোটি টাকার। অন্যদিকে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের কলেবর আট হাজার ৮৫০ কোটি টাকার। বিগত ১৬ বছর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে সব নতুন নিয়োগ, নতুন প্রকল্প ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছেন বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে।

এমন সব দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নির্বিঘ্নে অবসর-পূর্ব ছুটিতে যেতে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান চললেও এখনো কোনো মামলা করেনি দুদক। বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলীর রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন প্রকৌশলী মীর আব্দুস সহিদ।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান এহতেশামুল রাসেল খান। সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও প্রধান প্রকৌশলী সাধু খাঁর আস্থাভাজন হিসেবে বিভাগের সর্বোচ্চ সুবিধা পেয়েছেন তিনি। বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির সুপারিশ ছাড়াই ২০২৪ সালের মে মাসে ২৬ জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে ডিঙিয়ে নিয়মের সর্বোচ্চ ব্যত্যয় ঘটিয়ে তাকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর (পরিকল্পনা) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফিজিবিলিটি স্টাডি সার্কেলের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ফরিদপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাহার উদ্দিন মৃধা বিগত সরকারের আমলে একাধিকবার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হলেও বঙ্গবন্ধু প্রকৗশল পরিষদের সদস্য পরিচয়ে পার পেয়ে যান।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে জরিপ অনুসন্ধান ও গবেষণা) শিশির কুমার বিশ্বাস। কুয়েট ছাত্রলীগের এই একনিষ্ঠ কর্মী শিশির ঢাকা বিভাগে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে যোগসাজশ করে পছন্দের ঠিকাদারদের কোটি কোটি টাকার কার্যাদেশ দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার সরকারি অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে অধিদপ্তরের অ্যাসিবিলিটি ফর ইমপ্লিমেন্টিং অব সোল্ড ওয়েস্ট অ্যান্ড ফেক্যাল স্টাডিজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইন ৫৩ ডিস্ট্রিক্ট লেভেল পৌরসভা অ্যান্ড আট সিটি করপোরেশন নামক প্রজেক্টের আওতায় বাংলাদেশের সব পৌরসভা জরিপের নামে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভান্ডার (প্রতিটি বাড়ি ও রাস্তাঘাটের ড্রোন ক্যামেরায় তোলা ছবি ও ভিডিওসহ তথ্য তৈরি করে) এই প্রজেক্টর পিডি হিসেবে নিয়োগ পান শিশির কুমার বিশ্বাস। তিনি এই প্রজেক্টটি টিলার নামক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বাস্তবায়ন করেন। প্রতিষ্ঠানটি তামজিদুল ইসলাম নামক একজনের হলেও মূলত এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শিশির নিজেই। আর এই তথ্যভান্ডার ভারতের কাছে পাচার করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বলে উচ্চতর তদন্ত চেয়েছে দুদক।

এসব ব্যাপারে শিশির কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘দুদক আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে, এ ব্যাপার আমার জানা নেই। তবে এ বিষয় নিয়ে আপনার সঙ্গে ফোনে কথা বলব না। সামনা-সামনি কথা বলতে চাই। আর আমার বিরুদ্ধে করা কোনো অভিযোগই ঠিক নয়।’

প্রকৌশলী নুর আহাম্মেদ ছিলেন ডুয়েট ছাত্রলীগের নেতা। একাধিক পদে দায়িত্ব পালনকারী বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের এই সদস্য বর্তমানে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টির পানি সরবরাহের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প নামে দুটি প্রকল্পের পরিচালক। এর আগে ৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্প ও পুকুর প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন। তার অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণে ৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্পের কাজ এত নিম্নমানের হয়েছে, অধিকাংশ পৌরসভাতেই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে। তার চাকরির মেয়াদ রয়েছে দুই বছরের কিছু বেশি সময়। অত্যন্ত দাপুটে এই কর্মকর্তাকে ৫ আগস্টের পরে সব নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চার বছর মেয়াদি রোহিঙ্গা প্রকল্পের পরিচালক বানানো হয়েছে।

গ্রাউন্ড ওয়াটার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) বিধান চন্দ্র দে। এর আগে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্পের পিডি ছিলেন। সীমাহীন দুর্নীতির কারণে ২০২৪ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও কোথাও পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম চালু হয়নি। নিয়ম ভেঙে এক ইউনিয়নের টিউবওয়েল অন্য ইউনিয়নে স্থাপন করা হয়েছে। বেশির ভাগ পিএসএফ ও আরো প্ল্যান্টের কাজ শেষ না করেই বিল দেওয়া হয়েছে। এর আগে গোপালগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় দেড় কোটি টাকার একটি পুকুর খনন না করেই সম্পদ ও অর্থ আত্মসাৎ করে ক্ষমতার জোরে ধামাচাপা দেন।

প্রকৌশলী মুন্সি হাচানুজ্জামান ৫২ জেলায় ল্যাবরেটরি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ৫২ জেলায় নির্মাণকৃত ল্যাবরেটরি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ল্যাবরেটরির জন্য কেনা মূল্যবান মেশিনারিজ পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প ছয় বছরেও শেষ হয়নি। সরকারি অর্থ অপচয়ের জন্য অডিট আপত্তি হয়েছে। ১৬ কোটি টাকার একটি কাজ পিপিআরের সব নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে প্রথম সাতজন দরদাতাকে বাদ দিয়ে অষ্টম স্থানে থাকা তার শ্যালকের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। চাকরি জীবনের শুরু থেকে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও ফরিদপুরের বাসিন্দা সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশারফ হোসেনের আশীর্বাদপুষ্ট এই কর্মকর্তা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

প্রকৌশলী তবিবুর রহমান তালুকদার বুয়েট ছাত্রলীগের নজরুল গংয়ের সদস্য ছিলেন। দুর্নীতির ‘মহানায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া’ এই প্রকৌশলী পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালার (পিপিআর) ব্যত্যয় ঘটিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে সর্বনিম্ন দারদাতাকে বাদ দিয়ে চতুর্থ, পঞ্চম অবস্থানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন। এসব অনিয়মের কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি আশঙ্কাজনক কম ও গুণগত মান অত্যন্ত নিম্ন। বিভিন্ন প্রকল্পের পরামর্শকদের বেতন থেকে পারসেন্টেজ গ্রহণ করা এবং টাকার বিনিময়ে এনজিও নিয়োগের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

টাঙ্গাইল জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সদস্য সুলতান মাহমুদ। বুয়েট ছাত্রলীগের নজরুল গংয়ের সদস্য ছিলেন তিনি। তার দুর্নীতির কারণে জামালপুরের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও পাইপলাইনের কাজ বন্ধ আছে। দুর্নীতির কারণে খাগড়াছড়ি বদলি হয়েছিলেন সুলতান মাহমুদ। ৫ আগস্টের পর মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের বিনিময়ে টাঙ্গাইলে পোস্টিং পেয়েছেন। মাগুরা ও গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকাকালে তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ ছিল।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..