মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ভারতে ১২ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত চুয়াডাঙ্গা এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী রেজাউল হক বিশ্বাস আর নেই ডাকসু নির্বাচন: যা জানা দরকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই সারা দেশে পূজা উদযাপিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ তাড়াইলে আছিয়া খাতুন মহিলা মাদ্রাসার অভিভাবক সম্মেলন, দোয়া ও পুরষ্কার বিতরণ মানিকগঞ্জে কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার আমতলীতে সাবেক স্বামীকে হত্যা করতে কিশোর গ্যাং ভাড়া! স্ত্রীসহ চারজন গ্রেপ্তার দেবীগঞ্জে খড়ের গাদায় চাপা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করতে কাজ করছে দুই ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মানিক ও যুবলীগ নেতা মনির আলাল দুলাল দুই ভাই আবারও বেপরোয়া

অদম্য জননী শাহানারা চৌধুরীর প্রাপ্তি ও পূর্ণতা

মনজুর মোরশেদ তুহিন (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৫৮৮২ বার পঠিত
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন দশম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত এক কিশোরী  বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিয়ে করে। ইচ্ছে ছিল স্বাধীন দেশে নিজেকে সুশিক্ষিত করে দেশ গঠনে সহায়তা করবে। মুক্তিযোদ্ধা পত্নীর তখনকার মনোবাসনা পূর্ণ না হলেও ৫২ বছর পর পেয়েছে সাধনার প্রাপ্তি।
 পটুয়াখালীতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে ভূষিত হয়েছে শাহানারা চৌধুরী। (শনিবার) ৯ডিসেম্বর পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম সফল এ জননীর হাতে তুলে দেন শ্রেষ্ঠ জয়িতা পদক।
১৯৫৭ সালের ২১ মার্চ  তৎকালীন বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী ইউনিয়নের, বাগদিয়া গ্রামের এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অদম্য এ জননী। পিতা রেজা আবুল হাসেম ও মাতা ওয়াজেদুন নেসা এর সন্তান দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে চতুর্থ শাহানারা শিশু কাল থেকেই ছিলেন আত্মপ্রত্যয়ী। তৎকালীন মুসলিম পরিবারে মেয়েদের লেখাপড়া সামাজিক ভাবে বাধাগ্রস্থ থাকা সত্বেও পিতার সহযোগিতায় আত্মবিশ্বাসী শাহানারা কলসকাঠী বি,এম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালে  ১০ম শ্রেনীতে একমাত্র নারী শিক্ষার্থী ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলেই বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশুনা। নিজেদের বাড়িতেই ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প। মায়ের সঙ্গে যোদ্ধাদের জন্য রান্নার কাজে সহযোগিতা করত শাহানারা। মহান মুক্তিযুদ্ধ তার জীবনের চেতনাকে আরও জাগ্রত করে তোলে। যুদ্ধচলাকালীন ১০ই সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিজীবী এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিয়ে করেন তিনি। স্ত্রীকে না জানিয়ে বিয়ের পরপরই স্বামী দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে চলে যান অন্যত্র। স্বাধীনতা পরবর্তী কিশোরী শাহানারা বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীকে নিয়ে শুরু করেন সাংসারিক জীবন। এর মধ্যে ১৯৭২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করলেও সাংসারিক চাপে আর এগিয়ে নিতে পারেনি তার পড়াশোনা।তবুও থেমে থাকেনি তার জীবন যুদ্ধ।  স্বাধীন বাংলাদেশে একে একে আট কন্যার জননী শাহানারা চৌধুরী৷ পুত্র সন্তান না থাকার কষ্ট কোনদিনও উপভোগ করতে হয়নি এই জয়িতাকে। কন্যাদের কারণেই পরিপূর্ণ আজ তার স্বপ্ন।
নিজের পড়াশোনার পরিপূর্ণতা না হলেও প্রত্যেক কন্যাদেরকে করেছেন উচ্চশিক্ষিত। নিজেরা সম্পদ না করে কন্যাদেরকে গড়ে তুলেছেন দেশের সম্পদ। অসুস্থতা জনিত কারণে দ্বিতীয় কন্যার মৃত্যু হলেও শাহানারার সাতকন্যা আজ সরকারের বিভিন্ন পদস্ত কাজে নিয়োজিত।  নিজের সফলতা খুঁজে পেয়েছেন কন্যাদের মাঝে। কন্যাদদের কারণেই আজ তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা।
আন্তজার্তিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমে  জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে সরকার খুঁজে পেয়েছে  শাহানারা চৌধুরীকে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের দেয়া জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা পদক ও স্বীকৃতিই তার প্রাপ্তি ও পূর্নতা।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..