ক্ষমতার অপ-ব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, ঘুষ কেলেঙ্কারী, ভুয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেয়া, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও চাল আত্মসাৎসহ নানাবিধ অভিযোগ এনে আওয়ামীলীগ দোষর আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
সোমবার বেলা ১১ টার দিকে আমতলী উপজেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়ে বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদল সদস্য মোঃ হেলাল প্যাদা সংবাদ সম্মেলন এমন অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে হেলাল প্যাদা বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগ দোষর আমতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই জনগনের সেবা না দিয়ে হয়রানী করে আসছেন। ক্ষমতার অপব্যহতার করে ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতির আখরায় পরিনত করেন। চাল বিতরণে অনিয়ম, আত্মসাৎ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেয়ার নামে ঘুষ গ্রহন করেন।
এছাড়াও তিনি তার বাবা কাঞ্চন আলী মৃধার নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গত রবিবার ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি ইউপি সদস্য ফিরোজ খাঁন তাপস ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান মিঠু মৃধার এমন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষুব্দ হয়ে তার (চেয়ারম্যান) সন্ত্রাসী বাহিনী তাপসকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো অভিযোগ করেন,চেয়ারম্যান মিঠুর বড় ভাই আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম মৃধার ছেলে সাবেক আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বর্তমানে ঝালকাঠি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বিল্পব দুর্নীতি মাধ্যমে শত কোট টাকা আয় করেছেন। ওই টাকা দিয়ে তিনি তালতলী ও আমতলীতে অন্তত কয়েক শত একর জমি ক্রয় করেছেন। পটুয়াখালী শহরের অভিজাত ফ্লাট বাড়ীর মালিক হয়েছেন। তার অবৈধ টাকা দিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী লালন-পালন করেছেন। তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা যুবদল সভাপতি ইউপি সদস্য তাপসের ওপর হামলা করেছে। পরে তারা তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য তাপস খাঁনের স্ত্রী জাকিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত ১৬ বছর ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার দোষরা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। এখন আমতলী উপজেলা বিএনপির বহিস্কৃত সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকির তার ক্রোধ মেটাতে চেয়ারম্যান মিঠু মৃধাকে ইন্দন যোগিয়ে আমার স্বামীকে মারধর ও হয়রানী করিয়েছেন। তিনিই আবার আমার স্বামীকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছেন এবং মামলায় আসামী করেছেন। আমি বিএনপির বহিস্কৃত নেতা জালাল উদ্দিন ফকিরসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের শাস্তি দাবী করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তৃহিন মৃধা, যুগ্ম আহবায়ক মকবুল খাঁন, কামরুজ্জামান হিরু মৃধা, যুবদল সদস্য সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক চৌকিদার, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবুল বাশার তালুকদার, মাহবুব আলম রিপন, উপজেলা কৃষকদল সভাপতি জাহাঙ্গির আলম, উপজেলা শ্রমিকদল সাধারণ সম্পাদক ইউপি সদস্য কামাল বিশ্বাস, পৌর শ্রমিকদল সভাপতি মিল্টন বিশ্বাস ও আমিনুল আকন প্রমুখ।
আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা বলেন, যুবদল সভাপতি ইউপি সদস্য ফিরোজ খাঁন তাপস নিজের অপকর্ম আড়াল করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। এ সকল অভিযোগের সঙ্গে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি আরো বলেন, উল্টো তাপস তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে গতকাল রবিবার আমাকে তুলে নিতে চেয়েছে এবং আমাকে ফাঁসাতে ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় নৌ-বাহিনী তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির বহিস্কৃত সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকির বলেন, আমার বিরুদ্ধে তাপসের স্ত্রী মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে আমি অবগত নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।