বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের নিবন্ধিত জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তালিকাভুক্ত জেলেদের অনেকেই চাল পাননি, বরং তাদের চাল আত্মসাৎ করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হারুন বয়াতি।
চাল না পেয়ে সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে শতাধিক ভুক্তভোগী জেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খাঁনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন এবং আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলায় মোট ৬ হাজার ৯৬৯ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। সরকার ঘোষিত ২২ দিনের ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ সময় (৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত) এই জেলেদের সহায়তায় সরকার বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রতিজনকে ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়।
তবে চাওড়া ইউনিয়নের ৬৪২ জন তালিকাভুক্ত জেলের মধ্যে প্রায় ৩০০ জন চাল পেলেও বাকি চাল বিতরণ না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জেলে ফরিদা বেগম, আম্বিয়া বেগম ও মামুন শরীফসহ অনেকে। তারা বলেন, আমরা তালিকাভুক্ত জেলে, তবু চাল পাইনি। চেয়ারম্যানের লোকজন আমাদের নাম বাদ দিয়ে চাল তুলে নিয়েছে।
জেলেরা আরও অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যানের লোকজন ডান হাত বাম হাত দিয়ে টিপসহি দিয়ে চাল বিতরণের তালিকা তৈরি করেছে, অথচ আমরা চাল পাইনি।
এ বিষয়ে চাওড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হারুন বয়াতি বলেন, মাস্টাররোল অনুযায়ী নিয়ম মেনেই চাল বিতরণ করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি। যারা অভিযোগ করেছেন, তারা প্রকৃত তালিকাভুক্ত জেলে নন।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কৃষিবিদ রাসেল মিয়া বলেন, চিঠি হাতে পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করা হবে। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার বলেন, জেলেরা প্রথমে আমার দপ্তরে অভিযোগ দেয়। পরে তারা ইউএনওর কার্যালয়ে যায়। ইউএনও তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন, যারা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
ইউএনও মো. রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে আমরা উপজেলা কৃষি অফিসারকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।