শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
আমতলী থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট! এমন আলোচিত ঘটনা জানেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসুস্থ সাবেক মেয়রের পাশে মানবিক নেতা: হাসপাতালে সাক্ষাৎ করলেন আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান তাড়াইলে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে ‘বিসিক উদ্যোক্তা মেলা-২০২৫’ নলছিটিতে ইয়ুথ আউটরিচ কমিউনিকেইটার টিম গঠনের লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণজাগরণ দল পটুয়াখালী সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন ছাগলে কলমি শাক খাওয়াকে কেন্দ্র করে হামলা — একই পরিবারের চারজন আহত, বরগুনা-১ আসনের মনোনয়নে ক্ষুব্দ আমতলী-তালতলী প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন এমরান চৌধুরী মোরেলগঞ্জে ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক

গান বাজনায় মুখরিত আনন্দময় এক বিদ্যালয়

রংপুর ব্যুরো:
  • আপলোডের সময় : শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৮২৭ বার পঠিত
গান বাজনায় মুখরিত আনন্দময় এক বিদ্যালয়..................................ছবি: সংগৃহীত

একদল শিক্ষার্থী বাদ্যের তালে তালে গাইছে গান, ঠিক পাশেই শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন একজন শিক্ষক। বিদ্যালয়ের গেটে প্রবেশ করতেই কানে ভেসে আসছে ‘এমন যদি হতো আমি পাখির মতো, উড়ে উড়ে বেড়াই সারাক্ষণ’। বিদ্যালয়ে ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করেন শিক্ষক আব্দুল মাজেদ। গান বাজনায় মুখরিত আনন্দময় এক বিদ্যালয়ে হয়ে উঠেছে এটি।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সেনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মাজেদ। সংগীতে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আগ্রহের কারণে ইউটিউবে ভিডিও দেখে বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন তিনি। নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে শিক্ষার্থীদের মাঝেও তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে সংগীতচর্চা, নাচ, অভিনয়সহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সহশিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে আব্দুল মাজেদের ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ বদলে দিয়েছে বিদ্যালয়টিকে। জানা যায়, ২০০৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল মাজেদ। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে আব্দুল মাজেদ শিক্ষার্থীদের গণিত শেখাতেন। একদিন তাঁর মনে হলো, বিদ্যালয়ে শেখার মধ্যে আনন্দ নেই। শিক্ষাকে আনন্দময় করার পথ খুঁজতে লাগলেন তিনি।

২০১৫ সালে ইউটিউব ঘেঁটে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখা শুরু করলেন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে প্রস্তাব দেন, ক্লাসের বিরতিতে শিক্ষার্থীদের সংগীত ও বাদ্যযন্ত্র শেখানোর জন্য। প্রধান শিক্ষকের সম্মতি পেয়ে প্রথমে নিজের টাকায় একটি বাদ্যযন্ত্র ক্রয় করেন। তা দিয়েই শিক্ষার্থীদের নিয়ে চলতে লাগল সংগীত শেখানোর আসর। বিদ্যালয়ে দেখা যায়, সাজানো-গোছানো বিদ্যালয়ের মাঠে সৌরভ শর্মা, সাদ আল মুনতাসীর, নুর হোসেনেরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গাইছে গান।

অপরদিকে গানের তালে তালে মিষ্টি, শাম্মিরা নাচছে। আব্দুল মাজেদ হাতবয়া বাজিয়ে তাদের সঙ্গ দিচ্ছেন। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌরভ শর্মা বলেন, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি, তখন থেকে গান শিখছি। এখন আমি অনেকগুলো গান গাইতে পারি। কাহন ও গিটার বাজাতে পারি। স্কুলের ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে চর্চা করি। এখন স্কুলে না এলে কেমন জানি লাগে। আরেক শিক্ষার্থী বাপ্পি হাসান বলেন, আগে স্কুলে নতুন কেউ এলে ভয় ভয় লাগত। এখন সেই ভয় আর নাই। স্যার (আব্দুল মাজেদ) আমাদের সব ভয় দূর করে দিয়েছেন।

ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহণ করা শিক্ষক আব্দুল মাজেদ বলেন, যেদিন সংগীতের ক্লাস চলে, সেদিন প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। এতে তিনি উৎসাহ পান, যা নজরে আসে প্রধান শিক্ষকেরও। তিনি বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার তহবিল থেকে ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। যা দিয়ে কাহন, হাতবয়া, জিপসি ও গিটারের মতো বাদ্যযন্ত্র ক্রয় করা হয়। গান শেখানোর পাশাপাশি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে অন্য সহশিক্ষা কার্যক্রমও। একসময় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি আশানুরূপ ছিল না। এখন উপস্থিতি শতভাগ বললেই চলে। ঝরে পড়ার হারও শূন্যের ঘরে। নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কারও নিয়ে আসছে শতবর্ষী এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..