টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ ও কার্যাদেশের পূর্বেই পূর্ব নির্ধারিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়ার তথ্য প্রমান পাওয়া গেছে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারী পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে ১০টি কাজ সম্বলিত একটি খোলা টেন্ডার পদ্ধতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং এটি খোলার তারিখ ছিল ৪ঠা ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যে মির্জাগঞ্জ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপনের একটি কাজ রয়েছে যার টেন্ডার আইডি নম্বর ১০৬৫২১৫। এর প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয় ১২ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা। এতে ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই কাজে অংশগ্রহণ করে। কতৃপক্ষ যাচাই-বাছাই ও মূল্যয়ন করে এস এম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়। ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখ কার্যাদেশ দেয়া কাজটির মেয়াদ ৩ মাস। কিন্তু কার্যাদেশ এর পূর্বেই গভীর নলকুপটি স্থাপনের কাজ শেষ করেছে বলে জানায়। কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এস এম এন্টারপ্রাইজ আগে ভাগেই কাজটি শেষ করে মির্জাগঞ্জ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালকে কাজটি বুঝিয়ে দিয়েছে। বাকি ৯ টি কাজ সম্পর্কে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কোন স্বচ্ছ তথ্য পাওয়া যায়নি।
মির্জাগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শামসুল ইসলাম সোহেল বলেন, এইচইডি বিভাগ চলতি বছরের ১লা ফেব্রুয়ারী নলকুপ স্থাপনের কাজ শুরু করে এবং ১২ দিনে তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। পরবর্তী চার দিনের মধ্যে আমাদের কাছে কাজ হস্তান্তর করে।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, হাসপাতালের পুরানো নলকুপটি কিছুদিন পূর্বে বিকল হয়েছিল তাই নতুন নলকুপ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা পরে। বাহিরের অংশে দেখা যায় নলকূপের হাউজ থেকে মাত্র ১০ মিটারের দূরত্বে পাম্প স্টেশন রুম। পুরানো মরিচা পড়া পাইপ দিয়ে নলকুপ হাউস থেকে পাম্প স্টেশনের সংযোগ দেয়া। তবে নলকুপের এর ভিতর পাম্প সহ কিছু মাল পুরাতন নলকুপ থেকে সংগ্রহ করে লাগানো হয়েছে যা অদুর ভবিষ্যতে বিকল হয়ে যেতে পারে। নতুন নলকূপ স্থাপন সহ মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই কাজ শেষ করে পাম্প স্টেশন এর সাথে সংযোগ তৈরি করে।
কার্যাদেশ কপি থেকে যানা যায়, নলকুপ স্থাপনে ১২ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকার মধ্যে বড় অংশে ৩৪ মি. মি. ডায়া পাইপে মাটির গভীরতা ও পানির সন্ধানের টেস্টের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ২ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। জায়গা পরিস্কার ও মালালাল পরিবহনের জন্য ব্যয় ধরা হয় ২ লক্ষ টাকা। ২০০ মিমি ডায়া ৪মিমি গভীরতার একটি টপ কাভারের মূল্য ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭০০ টাকা। কম্প্রেসার পাম্পের মাধ্যমে পাইপ পরিস্কারের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। ১০০ মিমি ডায়া ২৬৫ টি পিভিসি পাইপ এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা।
এ ব্যপারে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আলতাফ হোসেন এর নিকট বক্তব্য চাইতে গেলে তিনি বলেন, আপনারা কেন মির্জাগঞ্জ কাজের সাইটে গেলেন? এটা নিয়ে এতো স্টাডি করার কি আছে বুঝলামনা কিছু। ১০ বছর পড়াশুনা করে ২৮ বছর চাকুরী করি আমাকে এতো কিছু বুঝানোর দরকার নাই। ম্যথহুন নিয়া ভুল হইছে? আপনি কি কাজ চান নাকি ফরমুলা চান? এই চেয়ারে আড়াই বছর পর্যন্ত আছি, আমার সম্পর্কে জেনে আসেন। একই ঠিকাদার কিভাবে কার্যাদেশ এর পূর্বে কাজ শেষ করল এ ব্যপারে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারননি।
কার্যাদেশের পূর্বে নিদৃষ্ট কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ সম্পন্ন করতে পারবে কিনা জানতে চাইলে বরিশাল সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন, আমি এই মুহুর্তে কিছু বলতে পারছি না। হিস্ট্রি না জেনে কোন বক্তব্য দেয়া ঠিক হবে না।