পটুয়াখালী প্রতিনিধি
গ্রামীন মাটির রাস্তাসমূহ টেকসই করন (এইচবিবি) কাজে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে ১ কিলোমিটার রাস্তায় চলছে ইট সলিং এর কাজ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দ্বায়ীত্বে পরিচালিত কাজটির প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬০০ টাকা। স্থানীয়দের অভিযোগ দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে নিয়ম বহির্ভূত নিন্মমানের উপকরন ও মনগড়া পদ্ধতিতে কাজটি করা হচ্ছে।
জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ও অর্থায়নে রাস্তাটি এইচবিবি (ইটসলিং)এর টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। মের্সাস সিকদার কনস্ট্রাকশন এন্ড কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়ে কয়েকমাস পূর্বে রাস্তার বেড কেটে বালু ভরাট করে। বালু ভরাট কালীন রাস্তায় পর্যাপ্ত বালু না ফেলায় স্থানীয়দের বাধার মুখে পরে তবে রাজনৈতিক ক্ষমতা ও দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় ওভাবেই বালু ভরাট চালিয়ে নেয়। তবে ইট সোলিং এর কাজ শুরু হলে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ শুরু করে যা প্রথম থেকেই স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সচেতন মানুষের কাছে ২য় বারের মতো বাধার মুখে পড়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় প্রশাসনের পরিদর্শনের পর কাজটি পুনরায় চালু হয় তবে ঠিকাদার একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ায় পুনরায় নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অদক্ষ শ্রমিক ও অদক্ষ সুপারভাইজার এর মাধমে কাজ করানোর কারনে ইটের লেভেল কোথাও উঁচু-নিচু আবার কোথাও ফাঁকা ফাঁকা।
স্থানীয় সাবেক মেম্বার মোঃ করিম বলেন, ৭০ বছর বয়স হয়েছে এরকম পচা ইট দিয়ে এইচবিবি রাস্তা করতে আমার জীবনে দেখিনাই।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, মজিদের দোকান থেকে শুরু করে পরিতোষ বেপারী বাড়ির সামনের কার্পেটিং রাস্তা পর্যন্ত মাটি কেটে বেড তৈরি করে বালু ফেলা হয়েছে। যাতে বালুর লেয়ার মাত্র ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি। রাস্তার মধ্যে নবনির্মিত কালভার্টে থেকে মজিদের দোকান এরমধ্যে ইট সলিং এর কাজ চলছে। রাস্তায় বিছানো ইটের মধ্যে অধিকাংশ অত্যন্ত নিম্নমানের ইট যা চোখে দেখেই বোঝা যায়। বিছানো ইটের উপর বালু বিছানো থাকলেও হাঁটার সময় খট খট শব্দ আসে যা বিছানো ইট ফাঁকা ফাঁকা। রাস্তার কিছু কিছু জায়গায় ইট সলিং এর পাশে কোন মাটি নেই যাতে সামনের বর্ষা মৌসুমে পাশ দিয়ে দাঁড়া করানো ইট ভেঙে যাবে। চলমান সলিং কাজের ইট গুলোর মধ্যে অধিকাংশই অতি নিম্নমানের।
রাস্তায় কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, ভালো ও মন্দ ইট মিলিয়েই কাজ হচ্ছে ১.২.৩ নং ইটের সংমিশ্রণে কাজ করা হয়।
ঠিকাদার মোঃ রুবেল বলেন, কিছুদিন কাজ বন্ধছিল এলাকাবাসির কারনে, এখন কাজ চলমান আছে। তবে কি কারনে কাজ বন্ধ ছিল এ প্রশ্নের উত্তর তিনি এরিয়ে যান ।
পিপড়াখালী বাসিন্দা মামুন বলেন, পচা ইটদিয়ে কাজ করায় এলাকাবাসি কাজটি বন্ধ করে দেয়, যুবদলের নেতা আতাউর এসে কাজটি চালু করে দেয়। এতে ঠিকাদার আরো বেপরোয়া হয়ে খারাপ ইট এনে রাস্তায় কাজ করে। চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ও তার অফিসের জাহিদ এখান থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে এই পচা ইটা দিয়ে রাস্তা করার সহযোগিতা করে আসছে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সংবাদ পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি এবং নিম্নমানের ইট অপসারণের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে, এরপর ও যদি নিম্নানের সামগ্রী ব্যবহার করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, আগেও অভিযোগ পেয়েছি আমি ব্যবস্থা নিতে প্রকল্প কর্মকর্তাকে বলে দেব।