তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় রংপুরের কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া, নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা এবং লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যার আশঙ্কায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় সতর্ক বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা, গত কয়েক দিন ধরে উজানের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। আজ ১৩ আগস্ট বুধবার দুপুর ১২টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেন, সতর্কাবস্থায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, চর গ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ কয়েকটি চর এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। ফসলি জমি তলিয়ে গেছে, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
তিস্তার পানিতে লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীবেষ্টিত চর ও চরের গ্রামগুলোর ঘরবাড়ীতে হাঁটুসমান পানি হয়েছে। অনেকে গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছে।
অপরদিকে সকাল থেকে পানি বৃদ্ধি পেলেও দুপুর ১২টায় রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, গজঘন্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়ন, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, টেপামধুপুর ইউনিয়ন এবং পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর, দ্বীপচরের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
বন্যার আশঙ্কায় অনেকে ঘরবাড়ি নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। গঙ্গাচড়া লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ভারত থেকে নেমে আসা পানির কারণে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়ে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই সাথে উজানে ভারতের আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।