বরগুনার আমতলী উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোটি টাকার জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার বিকেলে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খানের নির্দেশে হলদিয়া ইউনিয়নের অফিস বাজার এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁশবাড়িয়া নদীর পাড়ে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া এলাকায় ৫৪/বি পোল্ডারে প্রায় ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে। ওই বাঁধের ওপর ভরসা করে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ, গবাদিপশু ও ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেয়ে আসছে।
অভিযোগ রয়েছে, ওই এলাকার কবির মল্লিক ও লিবিয়া প্রবাসী লিটন হাওলাদার প্রায় ৫৬ শতাংশ জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করেন। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, কবির মল্লিক ও জুয়েল মল্লিকের উপস্থিতিতে ১০-১৫ জন শ্রমিক দিয়ে ভবনের ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। এ ছাড়া একই বাজার এলাকায় শতাধিক ব্যক্তি অনুমতি ছাড়া পাকা স্থাপনা গড়ে তুলেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধের দুই পাশে ইমারত নির্মাণ করায় বাঁধ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে বাঁধ ধসে ভয়াবহ প্রাণহানী ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তারা দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান।
দখলদার কবির মল্লিক দাবি করেন, তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই ভবন নির্মাণ করছেন। তবে অনুমতির কোনো কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। অন্যদিকে লিবিয়া প্রবাসী লিটন হাওলাদারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
হলদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার মোঃ সাদিক মিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন জানান, কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হান্নান প্রধান বলেন, বাঁধের জমি দখল করে ভবন নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাঃ সফিউল আলম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতি করে কেউ অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে না।