বরগুনা জেলার পূর্বের তিনটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কেন বরগুনার তিনটি সংসদীয় আসন ফিরিয়ে দেওয়া হবে না—সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) অবকাশকালীন হাইকোর্টের যৌথ বেঞ্চের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথ এ রুল জারি করেন।
জানা গেছে, দেশের সর্ব দক্ষিণের উপকূলীয় জেলা বরগুনা ছয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। আয়তন ১৮৩১.৩১ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১২ লাখ। জেলাটিকে পায়রা (বুরিশ্বর) ও বিষখালী নদী বিভক্ত করেছে। পায়রা নদীর পূর্বপাড়ে আমতলী ও তালতলী উপজেলা, পশ্চিমপাড়ে সদর ও বেতাগী উপজেলা। বিষখালী নদীর পশ্চিমে পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলা অবস্থিত। স্বাধীনতার পর থেকে বরগুনা জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন ছিল। এর মধ্যে বরগুনা সদর ও বেতাগী নিয়ে বরগুনা-১, পাথরঘাটা ও বামনা নিয়ে বরগুনা-২ এবং আমতলী ও তালতলী নিয়ে বরগুনা-৩ আসন গঠিত হয়।
কিন্তু ২০০৮ সালের ১০ জুলাই তৎকালীন ১/১১ সরকারের সমর্থিত নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগকে সুবিধা দিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে বরগুনার তিন আসন ভেঙে দুই আসনে রূপান্তর করে। তখন বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-১ এবং পাথরঘাটা, বেতাগী ও বামনা উপজেলা নিয়ে বরগুনা-২ আসন করা হয়। এর ফলে জেলার সাড়ে ১২ লাখ মানুষ উন্নয়ন ও প্রতিনিধিত্ব বঞ্চিত হয়।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন বরগুনায় তিনটি আসন পুনর্বহাল না করেই খসড়া গেজেট প্রকাশ করে। পরে ১০ আগস্ট বরগুনার তিনটি আসন ফেরানোর দাবিতে ৯৫ জন আবেদন জমা দেন। ২৫ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হয়। তবে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন পুরোনো তিন আসন পুনর্বহাল না করেই গেজেট প্রকাশ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তালতলী উপজেলার নাগরিক ওমর আবদুল্লাহ শাহীন ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
রিটকারী ওমর আবদুল্লাহ শাহীন বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বরগুনায় তিনটি স্বতন্ত্র আসন ছিল। কিন্তু ১/১১ সরকার আমলে তা কমিয়ে আনা হয়। এতে জেলার সাড়ে ১২ লাখ মানুষ জাতীয় সংসদে তাদের মৌলিক অধিকার ও প্রতিনিধিত্ব হারিয়েছে। তাই অধিকার ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আদালত শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনকে রুল জারি করেছেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিশনকে এর জবাব দিতে হবে।