মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিক্ষকদের যৌক্তিক আন্দোলন, প্রাপ্তি ও সক্ষমতা ! ঝালকাঠিতে যুব সংগঠনের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের যে বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি পূরণ, আন্দোলন প্রত্যাহার বাগেরহাট-৩ আসনে ইসলামী আন্দোলনের বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা তাড়াইলে যুব সমাজের উদ্যোগে সামাজিক অবক্ষয় রোধে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত আমতলীতে জেলে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রকৌশলী আল মামুনের দাফন সম্পন্ন বরুন বাড়ীয়া ভোটকেন্দ্র স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন মোরেলগঞ্জে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান: মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জব্দ, দুই ফার্মেসিকে জরিমানা

শিক্ষকদের যৌক্তিক আন্দোলন, প্রাপ্তি ও সক্ষমতা !

মাহবুবুর রহমান বাবুল
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৫৭৫০ বার পঠিত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের সিংহভাগ মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় বেসরকারি ভাবে। নামেমাত্র কয়েক শতাংশ প্রতিষ্ঠান রয়েছে সরকারি। যা মোট জনগোষ্ঠীর তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ইতিমধ্যে প্রিয় স্বদেশ চার যুগ অতিক্রম করে পাঁচ যুগে চলমান। এরই মাঝে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হলেও শিক্ষার সাথে জড়িত সন্মানিত জাতি গড়ার কারিগরদের আর্থ সামাজিক জীবন মান নিন্মগামী। দক্ষিণ এশিয়াতে যেসব রাস্ট্র রয়েছে বিশেষ করে ভারত পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা যেখানে শিক্ষক সম্প্রদায়ের জীবন মান বাংলাদেশের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। কারণ শিক্ষকদের জীবন মান উন্নত হলেও জাতি ফিরে পাবে একটি আর্দশ ও সভ্য জাতি। বিশ্বের দরবারে অনায়াসে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সুযোগ পায় এবং প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ ঘটে । আর যদি শিক্ষকদেরকে যথাযথ মুল্যায়ন না করা হয় তখন সেই সমাজ ও রাস্ট্রের শানশওকত ঝিমিয়ে পড়ে। বেসরকারি শিক্ষক সম্প্রদায় সুদীর্ঘ কাল যাবত ন্যায্য অধিকার পেতে রাজপথ বেছে নিয়েছে। অনেক সময় কাদানে গ্যাস, টিয়ার সেল মরিচের গুড়া পানি সহ নানা ভাবে আক্রান্ত হয়েছে। যা কিছু পেয়েছে তা রাজপথে ঘাম ঝরানো ফসল হিসাবে জুটেছে। চলতি বছরের প্রথামার্ধে দেশের অন্যতম প্রাচীনতম ইসলামি বিদ্যাপীঠ ময়মনসিংহ কাতলাসেন কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী’র নেতৃত্বে দীর্ঘ বাইশ দিন আন্দোলনর ফলে ২৫% থেকে ৫০% বোনাস উন্নীত হয়েছে।

এ অর্জন বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য মাইলফলক হিসাবে বিবেচিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই অর্থবছরে প্রথম থেকে সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা’র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, ও কর্মচারীদের ৭৫% ঈদ বোনাস পেতে সরকারের সাথে যোগাযোগ করেন জাতীয়করণ জোটের প্রত্যাশীরা। কিন্তু বিভিন্ন দফতর অধিদপ্তর ফিজিক্যাল ও চিঠি চালাচালি করেন। এতে সুফল না পাওয়ায় চলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা দশ দিন শহিদ মিনারে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের সাথে আপস রফা হয়। ইতিমধ্যে দাবি আদায় করতে কালো ব্যাজ ধারণ, আমরণ অনশন, সচিবালয় ঘেরাও সহ নানা কর্মসূচি পালন করে। এই দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন গুলো পাশে থেকে দাবি আদায়কে ত্বরান্বিত করে এবং একাত্নতা ঘোষণা করে।

সারাদেশ থেকে লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মচারী শহিদ মিনারে জড়ো হয়ে প্রতিদিন দাবী আদায়ের নানা কৌশল অবলম্বন করে। এই আন্দোলনকে সামাজিক আন্দোলনে পরিনত করতে মিডিয়া প্রথম থেকে ছিল সোচ্চার। যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌছিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। এতে আন্দোলন বেগবান হতে সাহায্য করে। আন্দোলনকে বানচাল করতে নানা জন এই শিক্ষক সম্প্রদায়ের সাথে চলছাতুরীর আশ্রয় নিয়েছে কিন্তু জাতি তা ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। ৫% থেকে দরকষাকষি করে সমঝোতার মাধ্যমে অবশেষে ২১ অক্টোবর ১৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া দিতে শিক্ষা উপদেষ্টা সম্মতি জ্ঞাপন করে। এবং প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই শিক্ষক সমাজ নিয়ে বিগত সরকার সতের বছর বিভিন্ন কর্মসূচিকে বানচাল করতে সক্ষমতার অজুহাতে মিথ্যার আশ্বাসে আর দাবী গুলো আলোর মুখ দেখেনি এবং বাস্তবায়ন হয়নি।

কিন্তু এবারের আন্দোলন দক্ষ হাতে পরিচালনা করাতে এতে সুযোগ সন্ধানীরা তেমন সুবিধা নিতে পারেনি। জাতি এসব বিষয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সুন্দর, সাম্য ও ন্যায্য শব্দ গুলো আক্ষরিক অর্থে যথেষ্ট ওজন রয়েছে। অবহেলিত বেসরকারি শিক্ষক সমাজ ফিরে পাক তাদের প্রাপ্য পাওনা, আধুনিক শিক্ষায় প্রিয় স্বদেশ স্বনির্ভর হয়ে উঠুক তবেই মঙ্গল। নির্মোহ প্রচেষ্টা যে কাং্খিত লক্ষ্য পৌছাতে পারে তার জলন্ত প্রমাণ টানা দশ দিনের আন্দোলন। দেশ এগিয়ে যাক শিক্ষক সম্প্রদায়ের ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত নয় তাদের প্রাপ্য নিশ্চিত হোক এটাই হউক আগামী দিনের প্রিয় বাংলাদেশ।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি )
তারঘাট আনছারীয়া ফাজিল ( ডিগ্রী) মাদরাসা।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..